কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিলকে কেন্দ্র করে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সংঘাত-সংঘর্ষ-সহিংসতায় পুলিশের তিন শতাধিক সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ২২টি মামলা করেছে দিল্লি পুলিশ। আজ বুধবার এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় কৃষকেরাও আহত হয়েছেন। তবে ঠিক কতজন কৃষক আহত হয়েছেন, তা সুনির্দিষ্ট করে জানা যায়নি।
গতকাল মঙ্গলবার ছিল ভারতের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবস। বিতর্কিত তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে এদিন নয়াদিল্লির রাজপথে ট্রাক্টর মিছিল করার পূর্বঘোষণা ছিল দেশটির আন্দোলনরত কৃষকদের। কৃষকদের এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নয়াদিল্লিতে নজিরবিহীন সংঘাত-সংঘর্ষ-সহিংসতা হয়।
রাজপথে প্রজাতন্ত্র দিবসের বার্ষিক প্যারেড চলাকালেই সীমান্তে অবস্থানরত কৃষকদের একাংশ ব্যারিকেড ভেঙে রাজধানীতে ঢুকে পড়েন। কেউ পায়ে হেঁটে ঢোকেন, কেউ ট্রাক্টর নিয়ে। এই নিয়ে বিভিন্ন স্থানে কৃষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষের মধ্যেই একদল কৃষক রাজধানীর কেন্দ্রে পৌঁছে যান। তাঁরা লালকেল্লায় উঠে পড়েন। পরে অবশ্য লালকেল্লা থেকে কৃষকদের হটিয়ে দেয় পুলিশ।
গতকালের ঘটনায় এক কৃষক মারা যান। পুলিশ বলছে, তিনি ট্রাক্টর উল্টে মারা গেছেন। কিন্তু আন্দোলনকারীদের একাংশের ভাষ্য, পুলিশের গুলিতে ওই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ বলছে, গতকাল ৮টি বাস ও ১৭টি ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় বেশ কিছু কৃষকনেতাকেও আসামি করা হয়েছে।
এই সহিংসতার ঘটনায় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে বলেও সূত্র জানায়।
এদিকে সহিংস ঘটনার পরদিন কৃষকনেতারা আন্দোলনকারী কৃষকদের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে অনুরোধ জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, তাঁদের আন্দোলনের পথ দীর্ঘ।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ভারতের পার্লামেন্ট ভবন অভিমুখে কৃষকদের পদযাত্রার কর্মসূচি রয়েছে। তবে গতকালের সহিংস ঘটনার পর কৃষকদের এই কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে কৃষকনেতারা আজ সিংঘু সীমান্তে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।
এদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গতকাল একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে দিল্লিতে আধা সামরিক বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা অত্যন্ত সতর্ক অবস্থানে থাকবে বলে জানানো হয়েছে।