নাগরিকত্ব আইন সংশোধন কেন্দ্র করে অশান্তি বেড়েই চলেছে উত্তর পূর্ব ভারতে। আসামের পাশাপাশি অন্যান্য রাজ্যেও চলছে বিক্ষোভ। মিজোরামে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানই বয়কট করলেন সাধারণ মানুষ। এমনকি চীনে চলে যাওয়ার হুমকিও দিচ্ছেন মিজোরা।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হিন্দু, খ্রিষ্টানসহ একাধিক অমুসলিম শরণার্থীদের শর্ত সাপেক্ষে ভারতীয় নাগরিকত্ব দিতে চায় বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার। এরই বিরোধিতা করে রাজ্যে রাজ্যে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ।
বিক্ষোভের জেরে গতকাল শনিবার মিজোরামে প্রায় ফাঁকা মাঠেই প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করতে হলো। রাজ্যপাল কে রাজশেখরন খালি মাঠেই বক্তৃতা দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা সারলেন।
মিজোরামের বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির সমন্বয় কমিটি এবার প্রজাতন্ত্র দিবস বয়কটের ডাক দিয়েছিল। আইজলে মূল অনুষ্ঠানের বাইরে থেকে তাঁরা প্রতিবাদ জানায়।
শুধু তাই নয়, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রত্যাহারের দাবিতে বিশাল মিছিল হয় মিজোরামে। সেই মিছিলের পোস্টার এখন সামাজিক গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠেছে। পোস্টারে লেখা ছিল, ‘হ্যালো চায় না, বাই বাই ইন্ডিয়া।’
অসমে তো আন্দোলন চলছেই। ইতিমধ্যেই বিজেপির প্রধান জোট সঙ্গী অসম গণ পরিষদ (অগপ) তাঁদের সঙ্গ ত্যাগ করেছে। দলের ভেতরেও উঠছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা।
ভারত সরকার প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘ভারতরত্নের’ জন্য প্রয়াত ভূপেন হাজারিকার নাম ঘোষণা করেছে। আসামের কিংবদন্তি এই গায়ককে ভারতরত্ন দেওয়া নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক।
কংগ্রেসের অভিযোগ, ভূপেন হাজারিকাকে অসম্মান করছে বিজেপি সরকার। কারণ হিসেবে তাঁরা হাতিয়ার করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি টুইটকে।
মোদি টুইট করে ‘শ্রী ভূপেন হাজারিকা’কে অভিনন্দন জানিয়েছেন। কিন্তু এই বিখ্যাত সংগীত শিল্পী প্রয়াত হয়েছেন সাত বছর আগেই।
তাই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়ার কটাক্ষ, ‘সস্তার রাজনীতি করতে গিয়ে প্রয়াত শিল্পীকেই অসম্মান করেছেন মোদি। এটা গোটা অসমিয়া সমাজের জন্য অপমানকর।’
অন্যদিকে বিজেপি অবশ্য পুরোদমে প্রচারে লাগাতে চাইছে ভূপেন হাজারিকার ইমেজকে। এটা নিয়েও অবশ্য শুরু হয়েছে বিবৃতির লড়াই।
টুইটারে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী কটাক্ষ করেন বিজেপির সাম্প্রদায়িক ও বিভেদের রাজনীতি নিয়ে। পাল্টা আক্রমণে বর্তমানে বিজেপির নেতা তথা আসামের অর্থমন্ত্রী হীমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘উত্তর পূর্বাঞ্চল এখন নিরাপদ। কংগ্রেসের উদ্বেগের কানও কারণ নেই। কারণ কংগ্রেসের আমলে কী হয়েছে মানুষ তা জানেন।’
কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ আবার হীমন্তের পাল্টা মন্তব্য করতে ছাড়েননি। তাঁর পাল্টা কটাক্ষ, ‘আপনি কংগ্রেসে থাকতে কী করেছেন?’
হীমন্ত আগে কংগ্রেসেরই প্রথম সারির নেতা ও মন্ত্রী ছিলেন। বছর চারেক আগে বিজেপি যোগ দেন।