ভারতের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’। আজ রোববার বিকেলে ঘূর্ণিঝড়টি দেশটির অন্ধ্র প্রদেশ ও ওডিশা রাজ্যের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রাজ্য দুটিতে আঘাত হানার পর গুলাব প্রবেশ করতে পারে পশ্চিমবঙ্গে। এমন প্রেক্ষাপটে ঝড় মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য সরকার।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, গুলাবের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলার সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় প্রবল ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। এতে উত্তাল হয়ে উঠতে পারে সমুদ্র। আশঙ্কা রয়েছে জলোচ্ছ্বাসেরও। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় গতকাল শনিবারই পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় সতর্কতা জারি করেছেন কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা গণেশ কুমার দাস।
গতকাল জারি করা সতর্কতায় সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের দ্রুত উপকূলবর্তী এলাকায় নিরাপদে আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর জেরে গতকাল রাত অবধি কয়েক হাজার মাছ ধরার ট্রলার ফিরে এসেছে। সমুদ্র উপকূলের নিচু এলাকার অনেক বাসিন্দাকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়েছে। উপকূলবর্তী সব পঞ্চায়েতকে শুকনো খাবার ও পানি মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গুলাবের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় সমুদ্রে না নামতে প্রচার চালানো হয়েছে। পর্যটকদের অবিলম্বে নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে। কলকাতার রাজ্য সচিবালয় নবান্নসহ কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে জেলা, থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপট্টনম ও ওডিশার গোপালপুরের মধ্যবর্তী স্থান কলিঙ্গপট্টনমে ঘূর্ণিঝড় গুলাব প্রথম আঘাত হানবে।
এরপর সেটি ওডিশার দিকে এগোবে। ওডিশার পাশেই পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান হওয়ায় গুলাবের প্রভাব পড়তে পারে রাজ্যটির সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায়। এ কারণে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলায় ঝড়বৃষ্টি হতে পারে।
এর আগে চলতি বছরের ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ আঘাত হানে ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গে। সেদিন সকাল নয়টার দিকে ইয়াস প্রথম আছড়ে পড়ে ওডিশার বালেশ্বরের দক্ষিণে। ইয়াসের তাণ্ডবে ওডিশায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঝড়ে ক্ষতির মুখে পড়ে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাও।