ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ঘরের ভেতরের বায়ু উদ্বেগজনকভাবে উচ্চমাত্রায় দূষিত বলে নতুন গবেষণায় জানা গেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বাতাসে থাকা ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর ক্ষুদ্র বস্তুকণা পিএম২.৫–এর পরিমাণ ঘরের বাইরের চেয়ে ঘরের অভ্যন্তরে ‘যথেষ্ট মাত্রায়’ বেশি। খবর বিবিসি অনলাইনের।
২০১৮–২০ সালের মধ্যে গবেষণাটি করে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট (ইপিআইসি)। আর্থসামাজিক অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে দিল্লির কয়েক হাজার পরিবারের ওপর জরিপ চালানো হয়। তাতে দেখা যায়, ধনী–গরিবনির্বিশেষে সব পরিবারের মধ্যেই বায়ুদূষণের এমন মাত্রা দেখা গেছে।
ওই গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ঘরের ভেতরের অবস্থা এমন হওয়া সত্ত্বেও বায়ুদূষণ ঠেকাতে দিল্লির বেশির ভাগ পরিবারের কোনো আগ্রহ নেই।
বায়ুমান সূচকে প্রায় প্রতিনিয়ত বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে থাকে দিল্লি।
গবেষকেরা বলছেন, উচ্চ আয়ের পরিবারগুলো নিম্ন আয়ের পরিবারের তুলনায় ১৩ গুণ বেশি বায়ু পরিশোধক যন্ত্র (এয়ার পিউরিফায়ারের) রয়েছে। তবুও সেসব ধনী পরিবারের ঘরগুলোতে অভ্যন্তরীণ বায়ুদূষণের মাত্রা তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর পরিবারের তুলনায় মাত্র ১০ শতাংশ কম।
গবেষণা নিবন্ধটির প্রধান লেখক কেনেথ লি। তিনি বলেন, ‘ধনী-গরিবনির্বিশেষে কেউই বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহণ করতে পারছে না।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দেওয়া আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, বায়ুদূষণের কারণে সৃষ্ট রোগে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমরা বেশির ভাগ সময় বাড়ির ভেতরে বায়ুদূষণের শিকার হই। আর এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের হিসাব অনুযায়ী, বাইরের চেয়ে বাড়ির ভেতরে বায়ুদূষণের মাত্রা দুই থেকে পাঁচ গুণ বেশি।
ভারতের জন্য তা আরও বড় উদ্বেগের বিষয়। কেননা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ৩০টি শহরের ২২টি ভারতের। বায়ুদূষণে ভারতে বছরে ১০ লাখের বেশি মৃত্যু হয়।