ভারতে নাবালিকাদের বিয়ে করার প্রবণতা কিছুটা কমছে। কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ত্রিপুরায় উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে বাল্যবিবাহের হার। একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সমীক্ষা প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়।
১৫ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে কিশোরীদের বিয়ের প্রবণতায় ত্রিপুরা ভারতের মধ্যে দ্বিতীয়। গ্রামীণ এলাকার পরিস্থতি আরও ভয়াবহ। গ্রামাঞ্চলের ৮০ শতাংশেরই বেশি নারীর অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যায়।
ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের (এনএফএইচএস) প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে ইয়ং লাইভস নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা জানিয়েছে, ১৫ থেকে ১৯ বছরের মেয়েদের বিয়ের নিরিখে ভারতের জাতীয় হার প্রায় ১২ শতাংশ। এই সমীক্ষা হয় ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে।
এই সমীক্ষাতেই উঠে আসে ত্রিপুরায় ২১ শতাংশের বেশি নারীর বিয়ে হয়ে যায় ১৫ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে। ভারতীয় আইনমতে ১৮ বছরের নিচে নারীদের বিয়ে নিষিদ্ধ।
সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ত্রিপুরায় বিবাহিত নারীদের ৫২ শতাংশই অন্তত একবার নাবালিকা বয়সেই গর্ভধারণ করছে। ৫ শতাংশের বেশি একাধিক সন্তানের জন্ম দিচ্ছে।
ত্রিপুরা শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান নীলিমা ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ১২ বছরের শিশুও গর্ভধারণ করে এ রাজ্যে। হাইকোর্টের রায়ে সেই শিশু গর্ভপাতের সুযোগ পায়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই সুযোগটুকুও পাওয়া যায় না।
নীলিমা ঘোষ আরও বলেন, বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। কারণ, এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে শিশু ও মায়েদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি। গ্রামাঞ্চলে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন নীলিমা।
ভারতে ২০১১ সালে আদমশুমারি অনুযায়ী গোটা দেশে ১ কোটি ২১ লাখ কিশোরী বাল্যবিবাহের শিকার। ২০০৫–০৬ সালে বাল্যবিবাহের হার ছিল ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। তবে ২০১৫–১৬ সালের সমীক্ষা বলছে, গোটা দেশে সেই হার কিছুটা কমেছে। এই সময়ে ১৫ থেকে ১৯ বছরের কিশোরীদের বিয়ের হার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ।
সমীক্ষার প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে, শুধু নিম্নবিত্তদের মধ্যেই নয়, উচ্চবিত্ত বা মধ্যবিত্তদের মধ্যেও রয়েছে অল্প বয়সে বিয়ে করার প্রবণতা।
আর গর্ভধারণের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে ১৬ ও ১৭ বছরের কিশোরীরা।
অল্প বয়সে বিয়ে বন্ধ করতে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।