সাদা মার্বেল পাথরে তৈরি তাজমহল হলুদ আকার ধারণ করেছে, এমন খবর বেশ কয়েক বছর ধরেই শোনা যাচ্ছিল। এবার অনন্য এই স্থাপনা ধীরে ধীরে নাকি বাদামি ও সবুজাভ হয়ে যাচ্ছে! এ নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মদন লোকুর ও দীপক গুপ্তার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মঙ্গলবার ভারত সরকারকে এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিতে নির্দেশনা দেন। মূলত পরিবেশবাদীদের জমা দেওয়া ছবি পরীক্ষা করে আদালত ভারত সরকারকে এ নির্দেশনা দেন।
আদালত সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘আপনাদের যদি বিশেষজ্ঞ থাকেও, আপনারা কিন্তু তাঁদের ব্যবহার করছেন না। বিষয়টিকে আপনারা গুরুত্ব দিচ্ছেন না।’ ৯ মে এ বিষয়ে ফের সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হবে।
এই তাজমহলের রং ঠিক রাখতে এর আগে ভারত সরকার আশপাশের অনেক শিল্পকারখানা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মূলত তিনটি কারণে তাজমহলের রং পরিবর্তন হচ্ছে। কারণগুলো হলো পোকার বর্জ্য, তাজমহলের কাছে থাকা তেল পরিশোধনাগার ও ২০০ বছরের পুরোনো একটি শ্মশানঘাট। পাশাপাশি তাজমহলের সন্নিকটে অবস্থিত উত্তর প্রদেশ সরকারের একটি শপিং মলকে এই সমস্যার জন্য দায়ী করা হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তাজমহলের পাশে যমুনা নদীর যে অংশ বয়ে গেছে, তা অত্যন্ত দূষিত। হয়তো এই দূষণের প্রভাব সরাসরি পড়ছে তাজমহলের গায়ে। ভারত সরকার প্রায়ই নদীর সংশ্লিষ্ট এলাকাটি পরিষ্কার করে থাকে। গত জানুয়ারিতেও একবার নদীটি পরিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া হলদে ভাব ঠেকাতে তাজমহলের দেয়ালে কাদামাটির প্রলেপও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ তেমন কিছুই হয়নি।
বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের এই অনন্য নিদর্শন দেখতে প্রতিদিন ৭০ হাজারের মতো দেশি-বিদেশি পর্যটক সেখানে ভিড় করে থাকেন। মোগল সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রী মমতাজের স্মৃতির উদ্দেশে অপূর্ব এই সৌধ নির্মাণ করেন। ৪২ একর জায়গাজুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা অনন্য এই স্থাপনা ভারতের উত্তর প্রদেশের আগ্রা শহরে অবস্থিত।