ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা তুলে নেওয়ার প্রায় তিন মাস পরে ওই রাজ্য এখন আর রাজ্য থাকল না। জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে এর আলাদা পরিচিতি দাঁড়াল। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুসারে, দুটি অঞ্চল হিসেবে সেখানে কেন্দ্রের আইন জারি হবে।
বুধবার ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে জম্মু ও কাশ্মীরকে রাজ্যের বদলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
এনডিটিভি অনলাইনের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ আগস্ট নরেন্দ্র মোদি সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তা অনুমোদন করেছে সংসদ; যাতে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। আজ বৃহস্পতিবারই দুই আমলা গিরিশচন্দ্র মুর্মু জম্মু ও কাশ্মীরে এবং আর কে মাথুর লাদাখে উপরাজ্যপাল হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন। দুটি এলাকারই পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা থাকবে কেন্দ্রের হাতে। জমির বিষয়টি দেখবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নির্বাচিত সরকার।
গত ৪ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করার ঘোষণা দেয় বিজেপি সরকার। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে দ্বিখণ্ডিত করা হয়। জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা হয়।
কাশ্মীরের মর্যাদা বাতিলের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের আশঙ্কায় সরকার টেলিযোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন এবং কারফিউ জারি করা হয়। প্রধান শহর শ্রীনগর ও এর আশপাশের শহর ও গ্রামে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়।
রাষ্ট্রপতির নির্দেশ জারির মধ্য দিয়ে মোদির সরকার বাতিল করে দেয় ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা, যা জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দিয়েছিল। তাদের আলাদা পতাকা ছিল। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ছিল সংবিধান। কালে কালে সব হারিয়ে অবশিষ্ট ছিল সাংবিধানিক ধারা ও কিছু বিশেষ ক্ষমতা। পররাষ্ট্র, যোগাযোগ ও প্রতিরক্ষা ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ওই রাজ্যকে দেওয়া হয়েছিল, যা রদ করে রাজ্য থেকে লাদাখকে বের করে তৈরি করা হলো নতুন এক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, যার কোনো বিধানসভা থাকবে না। জম্মু-কাশ্মীরের পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে এর মাধ্যমে। এখন থেকে এর পরিচিতি হবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে। তবে তার বিধানসভা থাকবে। দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পরিচালিত করবেন দুই লেফটেন্যান্ট গভর্নর।
আরও পড়ুন:
জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ