তরুণ রোহিদাস পেশায় নরসুন্দর। অন্যের দোকানে কাজ করে হাত পাকিয়েছেন। কিন্তু পুঁজি না থাকায় নিজের একটি সেলুন দাঁড় করাতে পারছিলেন না তিনি। সাহস করে একদিন চলে গেলেন মন্ত্রীর কাছে। মনের কথা খুলে বললেন তাঁকে। মন্ত্রীও তাৎক্ষণিক রোহিদাসের দক্ষতা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন। চুল কাটতে বললেন তাঁকে। রোহিদাস কাজে লেগে পড়লেন। শেষে চুলের ছাঁট মন্ত্রীর এতটাই পছন্দ হলো যে সঙ্গে সঙ্গেই রোহিদাসকে ৬০ হাজার রুপি দিয়ে দিলেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের খান্দোয়া জেলার গুলাইমাল এলাকায় গত বৃহস্পতিবার। রোহিদাস ওই এলাকারই বাসিন্দা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে জানানো হয়, গুলাইমাল এলাকায় বৃহস্পতিবার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন মধ্যপ্রদেশ রাজ্য সরকারের বনমন্ত্রী বিজয় শাহ। ওই অনুষ্ঠানেই হাজির হন রোহিদাস। তিনি মন্ত্রীকে জানান, তিনি নিজের একটি সেলুন দাঁড় করাতে চান, কিন্তু তাঁর পুঁজি নেই। এ কথা শুনে মঞ্চে উপবিষ্ট মন্ত্রী সেখানেই রোহিদাসকে নিজের চুল–দাড়ি কেটে দিতে বলেন। সঙ্গে সঙ্গেই মাস্ক পরে কাজে লেগে যান এই নরসুন্দর। মঞ্চেই মন্ত্রীর চুল–দাড়ি কেটে দেন তিনি। এরপর রোহিদাসের কাজে মন্ত্রী বিজয় শাহ এতটাই খুশি হয়ে যান যে তাৎক্ষণিক তাঁকে ৬০ হাজার রুপি দিয়ে দেন।
ঘটনাটি এখন ভারতে অনেকের মুখে মুখেই ফিরছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রদেশে অন্যতম আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে এটি।
পরে বিজয় শাহ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারি মোকাবিলায় সরকার যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল, তার কারণে অনেক মানুষই কঠিন সময় পার করছে। গত কয়েক মাসে অনেকেই কাজ হারিয়েছে। মঞ্চেই চুল কাটতে নির্দেশ দেওয়ার কারণ সম্পর্কে এই মন্ত্রী বলেন, রোহিদাসের দক্ষতা যাচাইয়ের পাশাপাশি আরও একটি কারণে তিনি ওই নির্দেশ দিয়েছিলেন। তা হলো, মানুষের মধ্যে এই আত্মবিশ্বাস তৈরি করা যে সাবধানতা অবলম্বন করলে সংক্রমণের ভয় নেই। বনমন্ত্রীর নিজস্ব তহবিল থেকে রোহিদাসকে ওই অর্থ দেওয়া হয়েছে বলেও এ সময় জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ভারতে করোনায় সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৪৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃত্যু হয়েছে ৭৬ হাজারের বেশি রোগীর। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৫ লাখের বেশি করোনা সংক্রমিত রোগী। করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার গত মার্চের শেষ দিকে দেশজুড়ে লকডাউন দেয়। পরে অবশ্য কয়েক দফায় এই লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের বনমন্ত্রী বিজয় শাহ পিটিআইকে আরও বলেন, যেসব তরুণ নিজস্ব ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে চান, রাজ্য সরকার তাঁদের ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ দেবে। এ ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতাকে শুধু ওই ঋণের অর্থই পরিশোধ করতে হবে। আর রাজ্য সরকার পরিশোধ করবে ঋণের সুদ।