ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ত্রাণের জন্য এখানে-সেখানে ছুটতে হবে না। ত্রাণ বিতরণে স্বচ্ছতা আনতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার চালু করেছে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ প্রকল্প। রাজ্য সরকার দুয়ারে এসে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ত্রাণ বিতরণ করবে। এবার আর্থিক সাহায্যের অর্থও হাতে হাতে দেওয়া হবে না। সাহায্যের অর্থ চলে যাবে ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে।
গত বছর আম্পানের পর ত্রাণ বিতরণ ও আর্থিক সাহায্য নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছিল। সে জন্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা এবার ত্রাণ বিতরণে স্বচ্ছতা আনতে আর নেতাদের ওপর ভরসা করছেন না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর সরকার। আর ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে যাতে নয়ছয় না হয়, সে জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আগামী ৩ জুন থেকে এই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, এবার সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেবেন। তালিকা তৈরি করবেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখবেন। তারপর বিতরণ করবেন ত্রাণ ও অর্থ। তিনি জানান, এই লক্ষ্যে এখন এক হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে।
মমতা আরও বলেন, এই দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পের লক্ষ্য নিয়ে রাজ্যের ঘূর্ণিঝড়দুর্গত এলাকার থানা ব্লক, পঞ্চায়েত এলাকায় ক্যাম্প করবে রাজ্য প্রশাসন। সেখানে এসেই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা আবেদন করবেন। এই আবেদন গ্রহণ করা হবে জুন মাসের ৩ তারিখ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত। এরপর ওই আবেদন যাচাই-বাছাই করবেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। যাচাই-বাছাই চলবে ১৯ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত। এ সময় সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরেজমিন তদন্ত করবেন। ক্ষতির হিসাব করবেন।
এরপর ১ থেকে ৮ জুলাইয়ের মধ্যে ত্রাণের টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেবে রাজ্য সরকার। একইভাবে অন্যান্য ত্রাণও বিতরণ করা হবে দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পের আওতায়। ত্রাণ বিতরণে দলমত দেখা হবে না। যে দলেরই হোক, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা সাহায্য পাবেন।