গুজরাট দাঙ্গায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থেকে নরেন্দ্র মোদিকে অব্যাহতির রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল গত শুক্রবার খারিজ করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এর পরদিন ওই আপিলের যুগ্ম আবেদনকারীদের অন্যতম সমাজকর্মী তিস্তা শীতলবাদকে আটক করা হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শনিবার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি খুব মন দিয়ে আদালতের ওই রায় পড়েছি। রায়ে স্পষ্ট তিস্তা শীতলবাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর এনজিও দাঙ্গা নিয়ে পুলিশকে ভিত্তিহীন তথ্য দাখিল করেছিল।’ এরপরই সন্ধ্যায় গুজরাট সন্ত্রাস দমন বাহিনী বা অ্যান্টিটেররিস্ট স্কোয়াড (এটিএস) মুম্বাই গিয়ে সমাজকর্মী তিস্তা শীতলবাদকে আটক করে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সান্তাক্রুজ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে।
এদিকে আহমেদাবাদ পুলিশ আটক করেছে রাজ্য পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিচালক আরবি শ্রীকুমারকেও। রাজ্য পুলিশের অভিযোগের ভিত্তিতে শ্রীকুমারের বিরুদ্ধে একটি এফআইআরও দাখিল করা হয়েছে।
শনিবার সকালে গুজরাট পুলিশ তিস্তা শীতলবাদের বিরুদ্ধে এক অভিযোগ দাখিল করে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে। গত শুক্রবার গুজরাট মামলায় নরেন্দ্র মোদিকে ‘ক্লিনচিট’ দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যে কড়া মন্তব্য করা হয়েছিল, তাতে তিস্তার এনজিওর বিরুদ্ধে কিছু স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল। অভিযোগ, ভুয়া ও মিথ্যা নথি দিয়ে মামলা সাজানো হয়েছিল। সেই মামলা, যাতে গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অব্যাহতি পেয়েছেন, তার যুগ্ম আবেদনকারীর অন্যতম তিস্তা শীতলবাদ। প্রধান আবেদনকারী ছিলেন গুজরাট দাঙ্গায় নিহত সাবেক কংগ্রেস সংসদ সদস্য এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া জাফরি।
গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট ওই মামলা খারিজ করে দেন। রায়ে বলা হয়, ওই মামলা দায়েরের পেছনে অসৎ, ঘৃণ্য চক্রান্ত কাজ করেছিল। বিচারপতি এ এম খানবিলকরের বেঞ্চ এ কথাও বলেছিলেন, পদ্ধতির অপব্যবহারের জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। এই মন্তব্যও করা হয়, জাকিয়া জাফরির আবেদনের পেছনে অন্য কারও নির্দেশ ছিল।
তিস্তা শীতলবাদের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ আনা হয়েছে, সরকারিভাবে শনিবার রাত পর্যন্ত তা জানানো হয়নি। তবে বিভিন্ন সূত্রের খবর অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে জালিয়াতি, ষড়যন্ত্রসহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁকে আটক করা হলেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে কি না, তা-ও অনেক রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। শোনা যাচ্ছে, তাঁকে আহমেদাবাদ নিয়ে যাওয়া হবে। নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিস্তার এনজিওর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। টাকাকড়ি নয়ছয়ের অভিযোগ এনেছিল গুজরাট পুলিশ ও সিবিআই।
তিস্তার আইনজীবী বিজয় হিরেমাথ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের কিছু না জানিয়েই এটিএসের লোকজন তিস্তার বাড়ি ঢুকে পড়েন। তিস্তাকে তাঁরা হেনস্তাও করেন।’