ছাগলের দুধের উৎপাদন বাড়াতে ছাগল পালনের ওপর জোর দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সরকার মনে করে, গরুর দুধের চেয়েও ছাগলের দুধের পুষ্টিগুণ বেশি। তাই দেশজুড়ে যাতে ছাগলের দুধ বেশি উৎপাদন করা যায়, সে জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রণালয় একটি চিঠি দিয়েছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরে।
গরু ও গো-হত্যা নিয়ে গোটা ভারতে জল ঘোলা কম হয়নি। ২০১৪ সালে ভারতে বিজেপি সরকার গঠনের পর গো-হত্যা বন্ধ এবং গো-দুগ্ধ রক্ষার জন্য দেশব্যাপী অনেক আন্দোলন হয়েছে। গঠিত হয়েছে গো-রক্ষা কমিটি। গো-রক্ষা কমিটির রোষানলে পড়ে অনেকের প্রাণ গেছে। বিজেপি সরকার চাইছিল গো-হত্যা বন্ধ করে গো-সম্পদ রক্ষা করতে। গরুর দুধের উৎপাদন বাড়াতে মানুষকে আরও গো-পালনে উৎসাহিত করতে। কিন্তু গো-হত্যা হলে গরুকুল কমে যাবে এই আশঙ্কায় গরুকে দেবতারূপে স্বীকৃতি দিয়ে গো-রক্ষায় অবতীর্ণ হয় বিজেপি সরকার। তাতে অনেকটা সফলতাও পায় বিজেপি।
অন্যদিকে ছাগল মূলত মাংসের জন্যই বেশির ভাগ বিক্রি হলেও এখনো বৃহৎ আকারে ছাগলের দুধ উৎপাদনের তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই গরুর পর এবার ছাগলের দুধ উৎপাদনের দিকে নজর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
ছাগলের দুধ নিয়ে প্রথম মাতামাতি শুরু করে কর্ণাটক রাজ্য সরকার। সেখানে গঠন করা হয় ‘কর্ণাটক স্টেট শিপ অ্যান্ড গোট ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন’। তারাই প্রথম প্রচার করতে শুরু করে ছাগলের দুধে আছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। তাই এই দুধ যদি ছোট ও মাঝারি শহরতলিতে বিক্রি করা যায়, তবে ভালো রোজগার করতে পারবেন ছাগল খামারিরা।
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পরশোত্তম রূপালা সম্প্রতি একটি চিঠি লিখেছেন বিভিন্ন রাজ্য সরকারের কাছে। সেখানে তিনি জানতে চেয়েছেন, ওই রাজ্যে ছাগলের দুধের উৎপাদন কতটা হয়, ছাগল পালন কত হয় ইত্যাদি।
প্রতিমন্ত্রীর সেই চিঠি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছেও এসে পৌঁছেছে। মন্ত্রী বলেছেন, ছাগলের দুধের পাশাপাশি উটের দুধ উৎপাদনের দিকেও নজর দেবে তারা।
এদিকে মানুষের মুখে মুখে কথা ছড়িয়েছে, ছাগলের দুধ ডেঙ্গু রোগ সারাতে অদ্বিতীয়। যদিও এ নিয়ে সরকার নিশ্চিত করেনি যে, ছাগলের দুধে ডেঙ্গু সারে।
ছাগলের দুধে ডেঙ্গু রোগ সারে কি না, তা নিয়ে চিকিৎসক মহলে বিতর্ক আছে। চিকিৎসকেরা মনে করেন, যেহেতু ডেঙ্গুর কোনো প্রতিষেধক নেই, তাই অনেক মানুষই ভরসা রাখে ছাগলের দুধের ওপর।