গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। আজ শনিবার থেকে তাৎক্ষণিক এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। কয়েক দিন আগেই রেকর্ড পরিমাণ গম রপ্তানির কথা বলেছিল দেশটি। নতুন সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্ববাজারে গমের দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।
তীব্র দাবদাহের কারণে ভারতে এবার গমের উৎপাদন কম হয়েছে। ব্যাপক রপ্তানি–চাহিদার মধ্যে স্থানীয় বাজারেও গমের দাম রেকর্ড সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এরই মধ্যে রপ্তানি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত এল।
তবে সরকার জানিয়েছে, ইতিমধ্যে রপ্তানির জন্য ইস্যু হওয়া লেটার অব ক্রেডিটের (এলসি) বিপরীতে রপ্তানির সুযোগ থাকছে। এ ছাড়া ‘নিজেদের খাদ্য নিরাপত্তার চাহিদা পূরণের’ চেষ্টা করছে, এমন প্রতিবেশী দেশগুলোর অনুরোধ বিবেচনায় থাকবে।
ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। এতে কৃষ্ণসাগর অঞ্চল থেকে রপ্তানিতে ধস নামায় বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গম উৎপাদনকারী ভারতের ওপর নির্ভর করে আসছিল বৈশ্বিক ক্রেতারা। নিষেধাজ্ঞার ঘোষণার আগে চলতি বছর এক কোটি মেট্রিক টন গম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল দেশটি।
ভারতের রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈশ্বিক বাজারে গমের দাম নতুন উচ্চতায় গিয়ে ঠেকবে। এতে এশিয়া ও আফ্রিকার দরিদ্র ভোক্তারা ভোগান্তিতে পড়বে। বৈশ্বিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ব্যবসা করে আসা মুম্বাইয়ের একজন ডিলার বলেন, ‘রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা খুবই হতাশার। আমরা আশা করছিলাম, দুই থেকে তিন মাস পর রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আসবে। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতির অঙ্ক বেড়ে যাওয়ার কারণে সরকারের মনোভাবে পরিবর্তন আসে।’
খাদ্য ও জ্বালানির দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে এপ্রিলে ভারতের মুদ্রাস্ফীতি আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। এতে মূল্য নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়ানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও আগ্রাসী ভূমিকার প্রয়োজন বলে অর্থনীতিবিদদের ধারণা আরও পোক্ত হলো।
ভারতে গমের দাম রেকর্ড সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। কিছু স্পট মার্কেটে এখন প্রতি টন গমের দাম ২৫ হাজার রুপি (প্রায় ৩২২ ডলার)। বিপরীতে সরকার ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ২০ হাজার ১৫০ রুপি ঠিক করে দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, ভারত গত এপ্রিলে রেকর্ড ১৪ লাখ টন গম রপ্তানি করেছে এবং মে মাসে আরও ১৫ কোটি টন রপ্তানির জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।