পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের জীবন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, তিনিও খুন হয়ে যেতে পারেন। উত্তর প্রদেশে, গুজরাটে মানুষ খুন হয়েছে। মমতার কথা, ‘আক্রোশবদ্ধ বিজেপি আমাকে খুন করতে পারে। গান্ধীজিকেও খুন করেছে বিজেপি।’
আজ শনিবার বিকেলে এই বসিরহাট আসনের হাসনাবাদে তৃণমূল আয়োজিত এক জনসভায় এসব কথা বলেন মমতা।
লোকসভা নির্বাচনের প্রায় শেষ দিকে এসেও পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূলের আক্রমণের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী মোদিই। আজ তৃণমূল নেত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, মোদির মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেছে। আর এবার ফিরতে পারবেন না গদিতে।
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ষষ্ঠ দফার নির্বাচন কাল রোববার। কাল পশ্চিমবঙ্গের ৮ লোকসভা আসনে ভোট নেওয়া হবে। এই আসনের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য আসন হলো পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট আসন। এই আসনে তৃণমূলের হয়ে এবার লড়ছেন টালিউড তারকা নুসরাত জাহান।
আজ বসিরহাটে মমতার ভাষণে ক্ষোভ ঝরে পড়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওপর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুমকির সুরে বলেন, মোদিকে বিদায় নিতে হবে তাঁর দিল্লির সিংহাসন থেকে। আর দিল্লি সিংহাসনে বসবেন এবার নতুন এক ধর্মনিরপেক্ষ প্রধানমন্ত্রী। যে প্রধানমন্ত্রী তৈরি করবে এ দেশের সাধারণ মানুষ।
মমতা আরও বলেন, ‘আমাদের এই বাংলায় এখন মোদির বিরুদ্ধে কথা বলছে একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসই। অন্য সব বিরোধী দল মোদির ভয়ে চুপ হয়ে আছে।’ মমতা বলেন, মোদির সরকার দেশের সবচেয়ে বড় ফ্যাসিস্ট সরকার। এই সরকারই দেশের জন্য সবচেয়ে বিপদ। তাই তো দেশজুড়ে আওয়াজ উঠেছে মোদি হটাও, দেশ বাঁচাও। মমতা আরও বলেছেন, মোদির আমলেই দেশে সবচেয়ে বেশি কেলেঙ্কারি ঘটনা ঘটেছে। রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। আরবিআই, সিবিআই এখন কিনে নিয়েছে মোদি।
মমতা মোদিকে বিতর্কে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আসুন, বিতর্কে বসুন। মোদি প্রশ্ন করবেন। আমি উত্তর দেব। সেই ডাকেও সাড়া দেননি মোদি। শুধু কী তা–ই, মোদি তাঁর সাড়ে চার বছরের শাসনামলে কোনো কাজ করেননি। শুধু বিদেশ ঘুরে বেরিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘মোদি তো বাংলার সংস্কৃতি জানেন না, বোঝেন না। এই বাংলায় সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। আমিও এই সাম্প্রদায়িকতার কাছে মাথানত করব না।’
মমতা আজও বলেন, বাংলায় সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি এক হয়েছে। ওদের রুখতে হবে। তিনি ১৯ মের বসিরহাট লোকসভা নির্বাচনের আগে যাতে বিজেপি এলাকায় ঢুকে টাকা বিলাতে না পারে, সে জন্য সারা রাত এলাকার বিভিন্ন স্থানে পাহারা দেওয়ার জন্য দলীয় কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। বলেন, শেষ দফার নির্বাচনের সময় কোনো বহিরাগত যাতে এলাকায় ঢুকতে না পারে, সেদিকে নজর দিতে হবে।