কয়লা–কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ অভিষেককে তলব, ক্ষুব্ধ মমতা

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়                                      
 ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের অর্থনৈতিক গোয়েন্দা সংস্থা ইডির (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গে কয়লা কেলেঙ্কারি ও অর্থ পাচারে জড়িত অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে সমন জারি হয়েছে।

একই ঘটনায় অভিষেকের স্ত্রী রুচিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তলব করা হয়েছে। ২১ ও ২২ মার্চ আলাদাভাবে দিল্লিতে ইডির দপ্তরে তাঁদের হাজিরা দিতে হবে। রুচিরা হাজির হবেন কি না, তা নিয়ে উকিলের সঙ্গে পরামর্শ করছেন তিনি। অভিষেক ও রুচিরা এর আগে ইডির সমনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেন। তবে হাইকোর্ট সেই মামলা খারিজ করে দেন।

অভিষেক সম্পর্কে তৃণমূল নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো। গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা ও অভিষেকের কথিত দুর্নীতির অভিযোগ এনে ব্যাপক প্রচারণা চালায় ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। তৃণমূল বরাবরই দলের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

অভিষেক ও রুচিরাকে তলব করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যই সরকারি সংস্থা দিয়ে তাঁর দলের নেতাদের হয়রানি করা হচ্ছে। ‘মিথ্যা অভিযোগে’ কখনো অভিষেক, কখনো তাঁর স্ত্রীকে দিল্লিতে তলব করছে। এমনকি তাঁর বন্ধুদেরও ডাকা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

পশ্চিমবঙ্গের চাঞ্চল্যকর এই কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনায় অভিষেক ও রুচিরা ছাড়াও তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ১ হাজার ৩২৩ কোটি রুপি বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব অর্থ লন্ডন ও ব্যাংককের ব্যাংকে জমা পড়েছে। আর এই চক্রের পেছনে রয়েছে রাজ্যের একজন নামী কয়লা মাফিয়া। তিনি আবার যুব তৃণমূল কংগ্রেসের একজন শীর্ষ নেতাও। এখন তিনি পালিয়ে দেশছাড়া হয়ে বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন।

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কয়লাখনি থেকে অবৈধভাবে কয়লা উত্তোলনের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অভিযোগ আছে, রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই অবৈধভাবে তোলা কয়লা বিক্রির সঙ্গে জড়িত। তাঁরা বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই। এর পর থেকেই ঘটনাটি ‘কয়লা কেলেঙ্কারি’ নামে পরিচিতি পায়।