কাশ্মীরের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রভাবশালী মার্কিন আইনজীবীদের এক দল। কাশ্মীর উপত্যকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিতে তারা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। একই সঙ্গে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর আটককৃতদের মুক্তি দিতে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে প্রেসিডেন্টকে আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
ট্রাম্পকে লেখা এক চিঠিতে সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন, টড ইয়ং, বেন কার্ডিন এবং লিন্ডসে গ্রাহাম জানান, প্রতিটি দিন কাশ্মীরের জনগণের পরিস্থিতি ‘সংকটময়’ হয়ে উঠছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত চিঠিটির অনুলিপির বরাত দিয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়া গতকাল শুক্রবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। চিঠিতে লেখা ছিল, ‘অতএব, আমরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা পুরোপুরি পুনরুদ্ধার, কারফিউ ও অবরোধ তুলে নেওয়া এবং ৩৭০ ধারা বাতিলের পর আটককৃতদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরেক মার্কিন সিনেটর বব ক্যাসি বলেছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের মর্যাদা বাতিলের ভারতীয় সিদ্ধান্ত গত কয়েক দশকের নজির ও নীতি থেকে ‘কঠোরভাবে বদলে গেছে’। এতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বন্দ্ব বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ সিদ্ধান্তের ফলে জম্মু ও কাশ্মীরের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে তিনি গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ক্যাসি বলেন, পাকিস্তানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ বা দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগে ট্রাম্প প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। তাদের এই ব্যর্থতার কারণে জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যথাযথ ভূমিকা রাখতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত নয় বলে জানান তিনি।
সিনেটররা চিঠিতে লিখেছেন, পাকিস্তানকে তার ভূখণ্ড থেকে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর জন্য নিরাপদ আশ্রয় ভেঙে দিতে হবে। ভারত কিংবা কাশ্মীরকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে কাজ করছে এমন ব্যক্তিরা যেন সেখানে ঠাঁই না পায়। কাশ্মীর পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে দেশটিকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। তাঁরা লিখেছেন, ‘এই মানবিক সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা আপনাকে (ট্রাম্প) এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। জরুরি মানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলার পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই পারমাণবিক শক্তি সমৃদ্ধ দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অন্তর্নিহিত বিরোধ নিষ্পত্তি করতে সহায়তামূলক ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমরা আশা করছি।’
সিনেটররা বলেন, কাশ্মীর পরিস্থিতি গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।