কলকাতায় করোনায় সংক্রমিত রোগীদের মরদেহ নিয়মিত সৎকার না করার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণেই কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে করোনায় মারা যাওয়া লোকজনের মরদেহ।
কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে করোনা পরিস্থিতি। রাজ্যে বেড়ে চলছে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু।
কলকাতায় কোনো সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে করোনায় কারও মৃত্যু হলে মরদেহ রাখা হয় সেই হাসাপাতালের নিজস্ব মর্গে। এরপর খবর দেওয়া হয় কলকাতা পৌরসভাকে। তারা মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করে।
হিন্দুদের মৃতদেহের সৎকার করা হয় কলকাতার ইএম বাইপাসের ধাপার শ্মশানঘাটের বৈদ্যুতিক চুল্লিতে। মুসলিমদের দাফন করা হয় বাগমারীর পুরোনো কবরস্থানে।
জানা গেছে, ধাপায় সৎকারে রয়েছে দুটি বৈদ্যুতিক চুল্লি। কলকাতায় করোনায় মৃতের সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন ১২-১৪ জন হওয়ায় ধাপার দুটি চুল্লি দিয়ে যথাযথ সময়ে সৎকার কাজ করা যাচ্ছিল না। এতে বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গে জমতে থাকে মরদেহ।
এই সমস্যা থেকে উত্তরণে কলকাতা পৌর করপোরেশন ধাপার শ্মশানে আরও দুটি বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে। গতকাল কলকাতার এক তরুণ অভিযোগ করেছেন, কলকাতার ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি কোভিড হাসপাতালে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়েছে পাঁচ দিন আগে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে পৌর কর্পোরেশনকে জানালেও তারা গতকাল পর্যন্ত মরদেহের সৎকার করতে পারেনি। মৃতদেহ এখনো পড়ে আছে হাসপাতালের মর্গে।
গতকাল কলকাতার ডিসান হাসপাতাল বলেছে, তাদের হাসপাতালের মর্গে এখনো পড়ে আছে ৬ জনের মরদেহ।
আমরি হাসপাতাল বলেছে, তাদের সল্টলেকের হাসপাতালের মর্গে আছে ২টি মরদেহ। এ ছাড়া মেডিকা হাসাপাতালের মর্গে ৪টি, কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে ৪টি মরদেহ। যথাসময়ে সৎকার না হওয়ায় এভাবে কলকাতার বিভিন্ন কোভিড হাসপাতালে জমছে মরদেহ।
কলকাতা পৌরসভা বলছে, আগে কলকাতায় করোনার মৃতের সংখ্যা ছিল ৭-৮ জন। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৪-১৫ জন। কিন্তু ধাপার শ্মাশানে বাড়েনি সৎকারের চুল্লি। তাই নিয়মিত সৎকার করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ধাপায় আরও দুটি বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
করোনা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে
কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গে করোনা এখনো নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি রাজ্য সরকার। দিন দিন তা ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে ১ হাজার ৪৩৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের। এর মধ্যে কলকাতার সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ৪১৮ জন। মৃত্যু সংখ্যা ১০।
রাজ্যে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৪৪৮। মোট মৃত ৯৫৬ জন। কলকাতায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০ হাজার ২৬। মৃতের সংখ্যা ৫০৯।
রাজ্যে এখন সুস্থতার হার ৬১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৯ হাজার ২১৩ জন।