করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ভারতের কেরালায় জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ১৪ জনের দেহে মশাবাহিত এই ভাইরাস ধরা পড়ার পর রাজ্যজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিনা জর্জ থিরুভানানথাপুরাম জেলায় জিকা ভাইরাস সংক্রমণের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ২০১৬–১৭ সালে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। এই ভাইরাসের কারণে শিশুর মস্তিষ্কের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং গুইলাইন–ব্যারে সিনড্রোম নামে বিরল একটি রোগ হয়।
ভাইরাসটি সাধারণত এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। তবে শারীরিক সম্পর্কের মধ্য দিয়েও এর সংক্রমণ হতে পারে।
কেরালায় যাঁদের মধ্যে জিকা ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাঁরা সবাই স্বাস্থ্যকর্মী। রাজ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিনা জর্জ এক বিবৃতিতে বলেছেন, জিকা ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়েছে ২৪ বছর বয়সী এক অন্তঃসত্ত্বার নারীর। তিনি পার্শ্ববর্তী রাজ্য তামিলনাড়ুর সীমান্তবর্তী একটি শহরের বাসিন্দা।
জ্বর, মাথাব্যথা ও শরীরে ফুসকুড়ি নিয়ে তিনি গত ২৮ জুন রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। বুধবার তাঁর একটি সন্তান হয়েছে। ওই নারীর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি রাজ্যের বাইরে যাননি।
শুক্রবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, চলমান বর্ষা মৌসুমে আক্রান্ত এলাকা মশার প্রজননক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।
কেরালার স্বাস্থ্যসচিব ডা. রজন খোবরাগাড়ে বিবিসিকে বলেন, জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়া অঞ্চলে জোরালো নজরদারির জন্য টিম পাঠানো হয়েছে। তারা লোকজনকে সতর্ক করার পাশাপাশি অন্তঃসত্ত্বা নারীদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেবে এবং দম্পতিদের পরামর্শ দেবে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত এপ্রিল ও মে মাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ভারত। কেরালায় করোনা পরিস্থিতি খুব খারাপ হয়। এখনো দেশটিতে পরীক্ষার বিপরীতে করোনা শনাক্ত ১০ শতাংশের ওপরে। ভারতে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়েছিল এই রাজ্যেই, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। এখন সেই কেরালাতেই জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হলো।