সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি কার্যকর হয়েছিল। এখন এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা বাতিলের দাবিতে সেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে আসাম বিজেপিকে।
ইকোনমিক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এনআরসি বাতিলের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেতা ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা।
এনআরসি নিয়ে আসামের বিজেপি সরকার রয়েছে দারুণ অস্বস্তিতে। রাজ্যে বিজেপি সরকার টিকিয়ে রাখতে হলে তাদের যে হিন্দু ভোটার দরকার, তা উপলব্ধি করতে পারছে দলটির রাজ্য নেতৃত্ব। তাই এবার বিজেপির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, এনআরসির চূড়ান্ত রিপোর্ট বাতিলের দাবিতে তারা ভারতের সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হচ্ছে। এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা বাতিলের জন্য আবেদন করবে তারা।
হেমন্ত বিশ্বশর্মা আসামের বাঙালি অধ্যুষিত করিমগঞ্জ ও শিলচরে আয়োজিত বিজেপির সভায় বলেছেন, ‘আমরা এই এনআরসি বিশ্বাস করি না। এই এনআরসি বাতিলের দাবি জানাব আদালতে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কাছে নতুন করে এনআরসি দাবি করব। আগামী নভেম্বরে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনা হচ্ছে। এখন যারা দাঁত বের করে হাসছে, তখন তাদের কাঁদতে হবে।’
হেমন্ত বিশ্বশর্মা আরও বলেন, ধর্মীয় কারণে যেসব সংখ্যালঘুরা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য সংসদে আইন আসছে।
হেমন্ত বিশ্বশর্মা প্রশ্ন করেন, প্রাণ বাঁচাতে যে হিন্দুরা ভারতে এসেছেন, তাঁদের কি শত্রু চিহ্নিত করা যায়? তাই তিনি বলেন, যাঁদের ভারতের প্রতি আস্থা আছে, সেই সব বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিষ্টান, শিখ, পারসি—সবাই ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন। অসমিয়ারা কখনো বাঙালিবিরোধী নয়। তাঁরাও চান, বাঙালি হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হোক।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এনআরসির খসড়া তালিকার পর গত ৩১ আগস্ট আসামে প্রকাশ করা হয় চূড়ান্ত তালিকা। আর সেই তালিকায় বাদ যায় ১৯ লাখের বেশি মানুষের নাম। এর মধ্যে ১২ লাখ হিন্দু। বাকিদের মধ্যে রয়েছে মুসলিম, গোর্খাসহ আসামের আদিবাসীদের নাম।
এই তালিকায় যে এত পরিমাণ হিন্দুদের নাম বাদ যাবে, তা কল্পনাও করতে পারেনি বিজেপি। বিজেপির উদ্দেশ্য ছিল আসামে আসা অবৈধ মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত করা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাতে বাদ পড়ে যায় বেশির ভাগ হিন্দুর নাম। তাই বিজেপি এখন এনআরসি বাতিলের দাবি তুলছে।