২০১৬ সালের জুনে হাওড়ায় চার কেজি ওজনের একটি ইলিশের দাম উঠেছিল ২২ হাজার রুপি। ভারতে সাধারণত এত বড় ইলিশ ধরা পড়ে না। কিন্তু সত্তরের দশকে ফারাক্কা বাঁধ তৈরির আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতের এলাহাবাদ পর্যন্ত বিচরণ ছিল ইলিশের। ফারাক্কা বাঁধ তৈরির পর থেকে ইলিশের চলাচলের পথ পরিবর্তন হয়ে গেছে। ইলিশ আর ভারতে যায় না। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছে ভারত। এখন তারা তৈরি করেছে বিশেষ ইলিশ করিডর।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভারত নেভিগেশন লক নামে যে বিশেষ ইলিশ করিডর তৈরি করেছে, তা আগামী জুন মাস নাগাদ চালু হবে। এ প্রকল্প তৈরিতে ৩৬১ কোটি রুপি খরচ করেছে ভারত। বর্ষাসহ ইলিশের প্রজননের তিন মৌসুমে যাতে ভারতে জাটকা ঢুকতে পারে, সে লক্ষ্যে বিশেষ লক সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে। নেভিগেশন লক সিস্টেম হচ্ছে একটি যন্ত্র, যা পানিতে জাহাজ বা নৌকার প্রসারণে ব্যবহৃত হয়।
ইলিশের প্রজনন মৌসুমে রাত একটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত আট মিটার গেট খুলে দেওয়া হবে, যাতে জাটকা ভারতে ঢুকতে পারে। ওই সময়ে জাটকা বিচরণ করে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়, সত্তরের দশকে ফারাক্কা বাঁধ তৈরি হওয়ার আগে পর্যন্ত এলাহাবাদেও পৌঁছে যেত ইলিশ। কিন্তু এখানকার নেভিগেশন লকের কারণেই বাংলাদেশ থেকে ইলিশ এলাহাবাদ পর্যন্ত যেতে পারে না। সম্প্রতি এ লকের নতুন নকশা করা হয়েছে। এতে প্রজননের সময় ইলিশের যাতায়াতে বাধা থাকবে না।
ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়ে অথোরিটি অব ইন্ডিয়ার ভাইস চেয়ারম্যান প্রবীর পান্ডে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, ‘রাত একটা থেকে ভোর পাঁচটার মধ্যে আমরা আট মিটার পর্যন্ত গেট খুলে দেব। ওই সময়েই ইলিশ যাতায়াত করে।’ আইসিএআরসি সেন্টার ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট, কেন্দ্রীয় ওয়াটার কমিশন ও ফারাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্ট অথোরিটির সঙ্গে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। নিজেদের নকশা করায় ১০০ কোটি রুপি সাশ্রয় হয়েছে।
ভারতের জাহাজশিল্প মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, ইলিশের এই অভিবাসন–প্রক্রিয়ায় এ অঞ্চলে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। নদীর বৈচিত্র্য বাড়বে এবং মৎস্য অর্থনীতি বাড়বে।
আরও পড়ুন...