ইছামতীর দুই তীরে বিদায়ের সুর

দুই বাংলার ইছামতী নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জন নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে দুই বাংলার মানুষ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
দুই বাংলার ইছামতী নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জন নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে দুই বাংলার মানুষ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

শারদীয় দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী ছিল গতকাল শুক্রবার। কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও পারিবারিক পূজার বেশির ভাগ প্রতিমা বিসর্জনও হয়েছে। দিকে দিকে বেজে উঠেছে দুর্গা দেবীর বিসর্জনের বিদায়ের সুর।

কলকাতা, হাওড়া আর হুগলির গঙ্গার ৪৫টি ঘাটে দুর্গা দেবীর বিসর্জন চলেছে। রাজ্যের সর্বত্রই একই ছবি ছিল। তবে বহু সর্বজনীন পূজার প্রতিমা গতকাল বিসর্জন হয়নি। এই বিসর্জনের লক্ষ্যে কলকাতায় ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বর্ণাঢ্য দুর্গা কার্নিভ্যাল। কলকাতার রেড রোডে এই উৎসব হবে। এতে যোগ দেবে কলকাতার সেরা ৭৫টি দুর্গাপ্রতিমা।

গতকাল বিকেলে প্রতিমা নিরঞ্জন নিয়ে একাকার হয়ে যায় দুই বাংলা। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার টাকি শহরের বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে প্রবাহিত দুই বাংলার ইছামতী নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জন নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে দুই বাংলার মানুষ। এই টাকি শহরের ওপারে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার শ্রীপুর গ্রাম।

দুই বাংলার ইছামতী নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জন নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে দুই বাংলার মানুষ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

গতকাল বেলা তিনটা থেকে শুরু হয় প্রতিমা নিরঞ্জন উৎসব। মাঝ বরাবর পাহারায় থাকে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

পশ্চিমবঙ্গের উদ্যোক্তারা যেমন প্রতিমা নিয়ে নৌকায় করে তাঁদের ইছামতী নদীবক্ষে নৌকা মিছিল করেছেন, তেমনি বাংলাদেশের তীরে সে দেশের প্রতিমার নৌকা মিছিলও হয়েছে। প্রতিটি নৌকা বা জলযানে ছিল নিজ নিজ দেশের পতাকা। ঢাকঢোল বাজিয়ে নাচে–গানে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে দুই দেশের মানুষ একাত্ম হয়ে যায়। নৌকা থেকে অভিনন্দন জানান একে অপরকে। শুভেচ্ছা জানান বিজয়া দশমীর।

ইছামতীর নদীর দুই তীরে গতকাল এই বিসর্জন দেখতে হাজারো মানুষ জড়ো হয়। বেলা তিনটা থেকে শুরু হয় এই নিরঞ্জন উৎসব। শেষ হয় সন্ধ্যা ছয়টায়। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিমা বহনকারী ১০০টি নৌকা আর সাধারণ মানুষের ৮০০টি নৌকা যোগ দেয়। বাংলাদেশেও যোগ দেয় বহু প্রতিমাবাহী আর সাধারণ মানুষের নৌকা।