বিদেশি সাংবাদিকদের বিনা অনুমতিতে অবাধে আসাম যাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। আসাম যেতে হলে এবার থেকে বিদেশি সাংবাদিকদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেই অনুমতি দেওয়ার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবে। ৩১ আগস্ট আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) প্রকাশের আগে এত কড়াকড়ি ছিল না।
গতকাল বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সরকারিভাবে এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভারতে রয়েছেন অথবা নেই এমন যেকোনো বিদেশি সাংবাদিককে আসামে যেতে হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আগাম অনুমতি নিতে হবে। প্রয়োজনীয় সেই অনুমতি দেওয়ার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘরোয়াভাবে কথা বলবে। বিবৃতিতে বলা হয়, আসামকে অবশ্য সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়নি।
আসামের ক্ষেত্রে হঠাৎ এই অনুমতি নেওয়ার বিষয়ে জোর দেওয়ার কারণ কী, তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। আসাম থেকে প্রকাশিত এক ইংরেজি দৈনিকে গতকাল বুধবার খবর বেরোয়, এনআরসি প্রকাশের পর থেকেই আসামকে সংরক্ষিত এলাকার আওতায় আনা হয়েছে। বিদেশি সাংবাদিকদের রাজ্য থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। খবরে লেখা হয়েছে, এপির এক নারী সাংবাদিককে আসাম পুলিশ বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে।
দেশের বেশ কিছু রাজ্যে বিদেশিরা অবাধে যাওয়া-আসা করতে পারেন না। ‘প্রোটেক্টেড এরিয়া’ ও ‘রেস্ট্রিকটেড এরিয়া’ তালিকার মধ্যে ছিল অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিমের পুরো অংশ এবং জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান ও উত্তরাখন্ডের অংশবিশেষ। ২০১৮ সালের বিজ্ঞপ্তিতে সেই রাজ্যগুলোর মধ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামকেও ঢোকানো হয়। কিন্তু আসামের ক্ষেত্রে ওই নিয়ম এত দিন কড়াভাবে বলবৎ করা হয়নি। এ বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বহু বিদেশি সাংবাদিক অবাধে আসাম গেছেন এবং এনআরসি নিয়ে খবর করেছেন। আগস্টের শেষ দিনে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর বিদেশি মাধ্যমে যেসব খবর প্রকাশিত হয়, তার কিছু কিছু ভারতের ভাবমূর্তির সহায়ক নয় বলে সরকারি মহলের একাংশের ধারণা।