আসামের জাতীয় নাগিরকপঞ্জির (এনআরসি) সব তথ্যই সরকারি ওয়েবসাইট থেকে গায়েব হয়ে গেছে। দুই মাস ধরে ওই ওয়েবসাইটে কোনো তথ্য নেই। এ নিয়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
আসাম প্রদেশ কংগ্রেস এই খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেছে। বিধানসভার বিরোধী নেতা দেবব্রত শইকিয়া বলেছেন, এনআরসির ওয়েবসাইট থেকে সব তথ্য হাওয়া। তালিকায় কার নাম আছে কার বাদ গেছে, কিছুই জানা যাচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্টই ওই সব তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাতে সাধারণ মানুষ সব জানতে পারেন। আচমকা কীভাবে সব হাওয়া হয়ে গেল তা রহস্যজনক লাগছে। এর পেছনে ষড়যন্ত্র আছে।
আসামে এনআরসির বর্তমান কো-অর্ডিনেটর হিতেশ দেব শর্মা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা উইপ্রোর সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার জন্যই এই সমস্যা। এই বিপত্তির জন্য তিনি দায়ী করেছেন পূর্বতন কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলাকে। তাঁর দাবি, গত বছরের ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত উইপ্রোর সঙ্গে চুক্তি ছিল। কিন্তু পূর্বতন কো-অর্ডিনেটর তা নবায়ন করেননি। সে জন্য ১৫ ডিসেম্বর থেকে কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
আসামের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে অর্থ সংক্রান্ত একটা সমস্যা হয়েছে। কথাবার্তা শুরু হয়েছে। দিন দু-একের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
আসামের এনআরসি হয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। চূড়ান্ত তালিকায় নাম ওঠেনি ১৯ লাখ মানুষের। তাঁদের অধিকাংশই হিন্দু। ক্ষুব্ধ রাজ্য বিজেপি ওই এনআরসির রিপোর্ট খারিজ করে দেয়। তারা সারা দেশের সঙ্গে নতুন করে আসামেও এনআরসি করার দাবি জানায়। ইতিমধ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও জানান, আগে নাগরিকত্ব বিল সংশোধন করা হবে, পরে করা হবে এনআরসি। নাগরিকত্ব আইন পাস হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সারা দেশে বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে। এই অবস্থায় সরকারি ওয়েবসাইট থেকে আসাম এনআরসির যাবতীয় তথ্য গায়েব হওয়া বিস্ময়জনক।