নিজেদের সুন্দরবন অংশে বাঘ গণনার জন্য এম-স্ট্রাইপ নামের একটি অ্যাপ ব্যবহার করবে ভারত। নজরদারি–সংক্রান্ত সফটওয়্যারটি ব্যবহারের মাধ্যমে সুন্দরবনের ভারত অংশে বাঘের সঠিক হিসাব পাওয়া যাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সুন্দরবনের বেশির ভাগ পড়েছে বাংলাদেশে। বাকি অংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। এই রাজ্যে সবশেষ শুমারিতে বাঘের সন্ধান মিলেছিল ৯৬টি। বন কর্মকর্তারা বলেছেন, এবার নতুন পদ্ধতি অবলম্বনে বাঘের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এত দিন ভারতের অন্য অঞ্চলের মতো সুন্দরবনে বাঘ গণনা হতো হেঁটে সমীক্ষা চালিয়ে এবং বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। কিন্তু দুর্গম সুন্দরবনে তা বেশ কঠিন হওয়ায় এবার এম-স্ট্রাইপ অ্যাপে ই-ফাইলিং করে বাঘ গণনা হবে। পাশাপাশি গতবারের মতো ট্রাপ ক্যামেরাও ব্যবহার করা হবে। এ থেকে বাঘের শরীরের ডোরাকাটা চিহ্ন থেকেও তাদের শনাক্ত করা যাবে।
এম-স্ট্রাইপ অ্যাপ নিয়ে সুন্দরবনের বনকর্মীরা কীভাবে কাজ করবেন, সে বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সজনেখালীতে শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। সুন্দরবন বাঘ প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর তাপস দাস সাংবাদিকদের বলেছেন, ৫০ জন বন কর্মকর্তা ও কর্মীকে নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষ হলে তাঁরা আরও ৪০০ জন বনকর্মীকে অ্যাপের ব্যবহার বুঝিয়ে দেবেন। প্রত্যেকের মুঠোফোনে থাকবে অ্যাপটি।
এম-স্ট্রাইপ অ্যাপটি কিছুটা পরিবর্তন এনে বনকর্মীদের মুঠোফোনে যুক্ত করেছে ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার বিজ্ঞানী কামার কুরেশির নেতৃত্বে একটি দল। কামার কুরেশি বলেছেন, ‘জিও ট্যাগিং’–এর মাধ্যমে সুন্দরবনের এলাকাভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করতে পারলে, সেটি ভবিষ্যতে সমীক্ষার কাজে সুফল আনবে। আর এই পদ্ধতিতে পাওয়া তথ্য নির্ভুল হবে।
বাঘশুমারির জন্য পশ্চিমবঙ্গে সুন্দরবনের বাঘের বিচরণ ক্ষেত্রের ২ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৭৪৮টি স্থানে বসানো হবে ট্র্যাপ ক্যামেরা। ওই ট্র্যাপ ক্যামেরায় এক মাস ধরে ছবি তোলার কাজ চলবে। তারপর ক্যামেরা খুলে যাবতীয় তথ্য নেওয়া হবে। পাশাপাশি ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর বনকর্মীরা নৌকায় করে এম-স্ট্রাইপ অ্যাপের মাধ্যমে বাঘ সমীক্ষা শুরু করবেন। মার্চের মধ্যে ক্যামেরায় তোলা ছবি ও অ্যাপের মাধ্যমে সংগ্রহ করা তথ্য নথিভুক্ত করা হবে। পরে এপ্রিলে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে জাতীয় বন সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের কাছে।