জ্বর, কাশি ও গলা ব্যথা, তা হলে কি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও শেষ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হলেন? সোমবার এই প্রশ্নেই মুখর রাজধানী। কাল মঙ্গলবার করা হবে মুখ্যমন্ত্রীর পরীক্ষা।
এমনিতেই ৫১ বছর বয়সী কেজরিওয়ালের ঠান্ডার ধাত রয়েছে। শীত পড়তে না পড়তেই তিনি মাফলারে গলা ঢাকেন। সঙ্গে খুকখুকে কাশি। রোববার থেকেই হঠাৎ তাঁর সামান্য জ্বর জ্বর ভাব দেখা যায়। সেই সঙ্গে কাশি ও গলা ব্যথা। এসবই করোনার উপসর্গ। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি স্বেচ্ছা আইসোলেশনে চলে যান। রাজ্য সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, রোববার থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে তিনি নিজেকে স্বেচ্ছাবন্দি করে ফেলেন। সব মিটিং বাতিল করে দেন। চিকিৎসকদের ডাকা হয়। তাঁরা একদিন অপেক্ষার পর কার মঙ্গলবার কোভিড–১৯ এর পরীক্ষা করতে বলেন।
গত রোববার পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কাজকর্ম করেছেন। দিল্লির হাসপাতাল স্থানীয়দের জন্য সংরক্ষিত রাখার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি। দুপুরে আম আদমি পার্টির পক্ষ থেকে সঞ্জয় সিং তাঁর আইসোলেশনের কথা স্বীকার করে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ডায়াবেটিক। তাঁর হাঁপানিও রয়েছে। নিয়ম করে তিনি প্রাকৃতিক চিকিৎসা (ন্যাচারোপ্যাথি) করান। অল্প জ্বর, কাশি ও গলা ব্যথা হওয়ায় নিয়ম মাফিক তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হবে। মঙ্গলবার সেই পরীক্ষা।
লকডাউনের সময় বাসভবন থেকেই মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কাজ করেছেন। দলের বিধায়ক রাঘব চাড্ডা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী শুরু থেকেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরা সবাই চিন্তিত। রোববার রাতে ওঁর ঘুমও ভাল হয়নি। কিন্তু উনি প্রকৃত ফাইটার। আশা করি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।
দিল্লিতে সংক্রমণের হার (২৭ হাজার৬৫৪) মারাত্মক। সারা দেশে রাজধানী–রাজ্যের স্থান মহারাষ্ট্র (৮৫ হাজার ৯৭৫) ও তামিলনাড়ুর (৩১ হাজার ৬৬৭) পরেই। তৃতীয়। গত চব্বিশ ঘন্টায় দেশে নতুন সংক্রমিত হন ৯ হাজার ৯৮৩ জন। মোট আক্রান্ত ২ লাখ ৫৬ হাজার ৬১১। সংক্রমণ কমার কোনো লক্ষণ কোথাও দেখা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় দিল্লির হাসপাতালে শয্যার সমস্যাও ব্যাপক। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, রাজধানীর মানুষজনের জন্য দিল্লির হাসপাতাল সংরক্ষিত রাখা হবে। কংগ্রেস নেতা সাবেক অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছেন, দিল্লিবাসী কে জানাবেন কি? আমি যদি দিল্লি থেকে কাজ করি, তা হলে কি আমি দিল্লিবাসী? তাঁর আরও প্রশ্ন, আয়ুষ্মান ভারত বা জন আরোগ্য যোজনায় নাম লেখানো যে কেউ দেশের যে কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়ার যোগ্য। মুখ্যমন্ত্রী কি এই ঘোষণার আগে আইনি পরামর্শ নিয়েছিলেন?
দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ ঘটেছে কি না সেই প্রশ্ন উঠে গেছে। দিল্লির উপ মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া সোমবার জানান, কাল মঙ্গলবার এই বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তাঁরা বৈঠকে বসবেন।