মরক্কোয় ভূমিকম্পে বিভিন্ন স্থানে ভূমিধসের কারণে পাহাড়ি এলাকাগুলোয় যান চলাচল করতে পারছে না। এতে প্রত্যন্ত এসব অঞ্চলে ত্রাণ সরবরাহ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া সরকারের উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চলছে ধীরগতিতে। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
৮ সেপ্টেম্বর মরক্কোয় শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৮। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে মারাকেশসহ মরক্কোর বিস্তীর্ণ জনপদ একরকম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৯০১ জনের নিহত ও ৫ হাজার ৫৩০ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এই ভূমিকম্পে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাই অ্যাটলাস পর্বতমালার গ্রামগুলো। সেখানকার একটি গ্রামের বাসিন্দা ইদুমাদ মোহামেদ। ৪২ বছর বয়সী ব্যক্তি বলেন, যেখানে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে, সেখান থেকে তাঁর বাড়ি ১২ কিলোমিটার দূরে। গাধা ছাড়া অন্য কোনো বাহনে সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়।
ভূমিকম্পের পর সরকারের পক্ষ থেকে কেউ সেখানে এখনো যাননি। মোহামেদ বলেন, ‘আমাদের গ্রামে অনেক মারা গেছেন। কোনো কোনো পরিবার ১৫ স্বজন হারিয়েছেন; কেউ হারিয়েছেন ১২ জন, কেউ হারিয়েছেন ৭ জন।’
মোহামেদ বলেন, ‘আমাদের তাঁবু খুব দরকার। আমাদের কাছে যা আছে, তা পর্যাপ্ত নয়। এখনো অনেকে খোলা আকাশের নিচে শুধু কম্বলে মুড়ি দিয়ে ঘুমাচ্ছেন।’
এই পাহাড়ি এলাকার রাস্তাঘাটগুলো বেশ দুর্গম। আবার ভূমিকম্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেগুলো দিয়ে চলাফেরা করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। ভূমিকম্পের পর বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়শিবির খোলা হয়েছে। কোথাও কোথাও অস্থায়ী হাসপাতাল খোলা হয়েছে। কিন্তু এসবই করা হয়েছে এমন এলাকায়, যেখানে যাতায়াতের ব্যবস্থা আছে। ফলে পাহাড়ি এলাকার মানুষেরা তেমন কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না।
এ প্রসঙ্গে হাই অ্যাটলাসের আরেক গ্রামের বাসিন্দা আবদুল্লাহ হোসেইন বলেন, তাঁদের সেখানে যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। ভূমিকম্পের কারণে যেসব পাথরের বড় বড় খণ্ড এসে রাস্তায় পড়েছে, সেগুলো কেউ সরাতে পারছে না। গত বুধবার তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্পের ছয় দিন পেরিয়ে গেছে। আমরা এখনো ছোট ছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে ঘুমাচ্ছি। এমনকি আমাদের কাছে কম্বলও নেই।’