কায়িক শ্রম না করলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আরও ৫০ কোটি মানুষ

সব বয়সের মানুষকে হাঁটা, সাইকেল চালানো, খেলাধুলা, সাঁতার কাটা, ব্যায়াম করার মতো শারীরিক পরিশ্রম করতে পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

বিশ্বজুড়ে মানুষের মধ্যে কায়িক পরিশ্রমের প্রবণতা কমতে শুরু করেছে। এর প্রভাব পড়ছে স্বাস্থ্যে। মুটিয়ে যাওয়া, হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিসের মতো বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে বেশি ভুগছে মানুষ। জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে না পারলে ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বে আরও ৫০ কোটি মানুষ এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এই আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। খবর এনডিটিভির।

শুধু তা-ই নয়, শারীরিক পরিশ্রম না করার কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ায় দেশে দেশে মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয় বাড়ছে। গত সপ্তাহে প্রকাশিত ‘গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অন ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবছর স্বাস্থ্যসেবায় বাড়তি এ ব্যয় দাঁড়াতে পারে ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে। ডব্লিউএইচওর ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ডব্লিউএইচওর পরামর্শ, এসব সমস্যা সমাধানে মানুষকে অবশ্যই শরীরচর্চা করতে হবে। সরকারি উদ্যোগে সব বয়সের মানুষের শারীরিক পরিশ্রম বাড়ানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

প্রতিবেদনটি তৈরিতে ১৯৪টি দেশ থেকে তথ্য নিয়েছে ডব্লিউএইচও। এতে বলা হয়েছে, জনগণকে শারীরিক পরিশ্রম করানোর বিষয়ে ৫০ শতাংশের কম দেশে সরকারিভাবে নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। ৪০ শতাংশ দেশে এ-সংক্রান্ত নীতি বাস্তবায়নাধীন। ৩০ শতাংশ দেশ সব বয়সী মানুষের জন্য শারীরিক পরিশ্রমসংক্রান্ত জাতীয় গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে।

সংস্থাটি আরও বলেছে, জনগণকে শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করাতে কোনো দেশই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায়নি। তাই এ-সংক্রান্ত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে গতি বাড়াতে হবে। অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে কার্যকর নীতিগ্রহণ করতে হবে। সেই সঙ্গে এসব কারণে স্বাস্থ্যসেবায় যেসব বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে, তা দূর করতেও উদ্যোগী হতে হবে।

এই বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, ‘আমরা চাই, মানুষ শারীরিক পরিশ্রমে উদ্বুদ্ধ হবেন—এমন নীতিমালা আরও বেশি সংখ্যক দেশে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হোক। সব বয়সের মানুষকে অবশ্যই হাঁটা, সাইকেল চালানো, খেলাধুলা, সাঁতার কাটার মতো শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। এসবের ফলে শুধু ব্যক্তির শরীর ও মন ভালো থাকবে তা নয়; বরং সমাজ, পরিবেশ ও অর্থনীতির ওপর এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’