সমালোচনার মুখে নোবেল পুরস্কার অনুষ্ঠানে রুশ রাষ্ট্রদূতের আমন্ত্রণ বাতিল

গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবতার কল্যাণে যাঁরা অবদান রাখেন, তাঁরা পান বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ নোবেল পুরস্কার
রয়টার্স ফাইল ছবি

সমালোচনার মুখে চলতি বছরের নোবেল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান যোগ দিতে রাশিয়া ও বেলারুশের রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে নোবেল ফাউন্ডেশন। গতকাল শনিবার এ কথা জানানো হয়েছে।

প্রতিবছর বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার বিতরণে সুইডেনের স্টকহোমে জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গত বছর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়া ও বেলারুশের রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইরানে বিক্ষোভকারীদের ওপর দমনপীড়নের কারণে দেশটির রাষ্ট্রদূতের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

তবে গত ৩১ আগস্ট নোবেল ফাউন্ডেশন জানায়, তারা আগের মতো নোবেল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সব দেশের দূতদের আমন্ত্রণ জানানোর রেওয়াজে ফিরে যাবে। তাদের এই ঘোষণার পরপরই শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া।

সুইডেনের বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ জানান, তাঁরা রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতির জন্য নোবেল পুরস্কারের অনুষ্ঠান বয়কট করবেন। এসব রাজনীতিবিদের মধ্যে দেশটির মধ্য, পরিবেশবাদী, বাম ও উদারপন্থী দলের নেতারা রয়েছেন।

এই পটভূমিতে ২ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে নোবেল ফাউন্ডেশন জানায়, তারা বিশ্বাস করে, নোবেল পুরস্কারের মূল্যবোধ ও বার্তা যতদূর সম্ভব সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া জরুরি। সে কারণেই তারা গত বছরের বর্জনের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে চেয়েছিল।

এই ব্যাপারে দেখানো তীব্র প্রতিক্রিয়া ‘নোবেল পুরস্কারের বার্তাকে আড়ালে ঠেলে দেয়’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা তাই গত বছরের ব্যতিক্রম এই বছরও বেছে নিয়েছি, অর্থাৎ স্টকহোমে নোবেল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রাশিয়া, বেলারুশ ও ইরানের রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ জানানো হবে না।’

নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয় নরওয়ের রাজধানী অসলোতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে। গত বছর অবশ্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের অনুষ্ঠানে সব দেশের রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

এবারও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার অনুষ্ঠানে সব দেশের রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

শান্তি ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে নোবেল পুরস্কার দিতে সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

নোবেল পুরস্কার প্রবর্তন করেন সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল। তাঁর ইচ্ছা অনুসারে প্রতিবছর চিকিৎসা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। পরে এই তালিকায় যুক্ত হয় অর্থনীতি। গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবতার কল্যাণে যাঁরা অবদান রাখেন, তাঁরা পান বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার।