নৌকায় করে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা অভিবাসীদের
নৌকায় করে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা অভিবাসীদের

ইউরোপে গত বছর আশ্রয় চেয়েছেন ৪০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে ২০২৩ সালে ১১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। সংখ্যাটি আগের বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ৪০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি রয়েছেন। ২০১৫–১৬ সালে অভিবাসী সংকটের পর কোনো বছরে এত বিপুলসংখ্যক মানুষ আশ্রয়ের জন্য ইইউ দেশগুলোতে আবেদন করেননি।

গত বুধবার অভিবাসীদের আশ্রয়বিষয়ক ইইউ সংস্থা ইইউএএ এ তথ্য প্রকাশ করেছে। এই তথ্য এমন সময়ে প্রকাশ করা হলো, যখন ইউরোপের দেশগুলোতে অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়া নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক চলছে। নতুন তথ্য সে বিতর্ক বাড়াবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া চলতি বছরে ইউরোপীয় পার্লামেন্টসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।  

ইইউএএর তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে আশ্রয়ের জন্য ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি আবেদন করেছেন সিরিয়া ও আফগানিস্তানের নাগরিকেরা। এরপরই রয়েছেন তুরস্কের নাগরিকেরা। আগের বছরের তুলনায় দেশটির ৮২ শতাংশ বেশি নাগরিক ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন।

গত বছরে আবেদনকারীদের মধ্যে বড় একটি অংশ বাংলাদেশি। ইইউএএ বলছে, ২০২৩ সালে ৪০ হাজার ৩৩২ জন ইউরোপীয় ইউনিয়নের আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। আগের বছর আবেদন করেছিলেন ৩৩ হাজার ৭৩১ জন। দেখা গেছে, ২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশিদের আবেদনের সংখ্যা ক্রমেই বেড়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের হামলার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে আশ্রয়ের জন্য ছুটছেন উপত্যকাটির বাসিন্দারা। গত বছরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে প্রায় ১১ হাজার ৬০০ নাগরিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। এর আগে কখনো ফিলিস্তিনিরা এত আবেদন করেননি। তাঁদের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশির ভাগ দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না।

২০২৩ সালের ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে জার্মানি। মোট আশ্রয়প্রার্থীদের তিন ভাগের প্রায় এক ভাগের আবেদনপত্র গ্রহণ করেছে দেশটি। অন্যদিকে নিজ দেশের মোট বাসিন্দার প্রতি ৭৮ জনের বিপরীতে একজনকে আশ্রয় দিয়েছে সাইপ্রাস।

২০১৫–১৬ সালে অভিবাসী সংকটের পর থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর সীমান্ত নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। কঠোর করা হয়েছে অভিবাসীবিষয়ক আইনও। মধ্যপ্রাচ্য ও পূর্ব আফ্রিকা থেকে যেন তুলনামূলক কম মানুষ আশ্রয়ের খোঁজে ইউরোপে যান, সে জন্য এ দুই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তিও করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।