যুক্তরাজ্যের প্রথম অশ্বেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস গড়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক। তবে সুনাকের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী অক্ষতা মূর্তিও সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হচ্ছেন। ভারতের নাগরিক অক্ষতা ধনসম্পদের কারণে বেশ আলোচিত। সুনাক যখন অর্থমন্ত্রী ছিলেন, তখন যুক্তরাজ্যে অক্ষতার আবাসিক কর মওকুফ করা হয়। এ নিয়ে তুমুল আলোচিত-সমালোচিত হয়েছিলেন এ দম্পতি।
অক্ষতার বাবা ভারতীয় ধনকুবের এন নারায়ণ মূর্তি। তাঁকে ‘ভারতের বিল গেটস’ নামে ডাকা হয়। নারায়ণ মূর্তি প্রযুক্তি জায়ান্ট ইনফোসিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা। ১৯৮১ সালে স্ত্রীর কাছ থেকে ১৩০ ডলার ধার নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন তিনি। ইনফোসিসের সম্পদের পরিমাণ এখন ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। ওয়াল স্ট্রিটে নাম লেখানো প্রথম ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এটি। অক্ষতার মা সুধা মূর্তি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান টাটা মোটরসের প্রথম নারী প্রকৌশলী ছিলেন।
প্রণয় থেকে পরিণয় সুনাক-অক্ষতার। যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে এমবিএ পড়ার সময় তাঁদের পরিচয়। সেখানেই প্রণয়ে জড়ান তাঁরা। ২০০৯ সালের আগস্টে ভারতে তাঁদের বিয়ে হয়। সেই বিয়েতে রাজনীতিক, শিল্পপতি, তারকাসহ হাজারখানেক অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এই দম্পতির আনুশকা ও কৃষ্ণা নামে দুই মেয়ে রয়েছে।
৪২ বছরের অক্ষতা পেশায় ফ্যাশন ডিজাইনার। ২০১০ সালে তিনি তাঁর নিজের ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘অক্ষতা ডিজাইনস’ গড়ে তোলেন। বাবার কোম্পানি ইনফোসিসে তাঁর নামে প্রায় ১০০ কোটি ডলারের শেয়ার রয়েছে। ‘কাতামারান ভেঞ্চারস’ নামে একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন অক্ষতা। ২০১৩ সালে সুনাকের সঙ্গে যৌথভাবে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন তিনি।
সানডে টাইমসের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় অক্ষতার নাম উঠেছে। সংবাদমাধ্যমটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের চেয়ে অক্ষতার সম্পদের পরিমাণ বেশি। রানির মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৬ কোটি ডলার। আর অক্ষতার নামে শুধু ইনফোসিসেই ১০০ কোটি ডলার মূল্যমানের শেয়ার রয়েছে।
শুধু তা-ই নয়, ভারতে রেস্তোরাঁ ও ব্যায়ামাগার (জিম) ব্যবসায় বড় বিনিয়োগ করেছেন অক্ষতা। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও বাড়ি রয়েছে সুনাক-অক্ষতা দম্পতির। এসব সম্পদের কারণে সানডে টাইমস-এর শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় অক্ষতার নাম উঠেছে। সংবাদমাধ্যমটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের চেয়ে অক্ষতার সম্পদের পরিমাণ বেশি। রানির মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৬ কোটি ডলার। আর অক্ষতার নামে শুধু ইনফোসিসেই ১০০ কোটি ডলার মূল্যমানের শেয়ার রয়েছে।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বরিস জনসন সরকারের অর্থমন্ত্রী হন সুনাক। এর পর থেকে দেশটির রাজনীতিতে বেশ আলোচনায় আসে তাঁর নাম। তবে অক্ষতা আলোচনায় উঠে আসেন চলতি বছরের শুরুর দিকে। ওই সময় যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে আবাসিক কর মওকুফের আবেদন করেন ব্যবসায়ী অক্ষতা। যুক্তরাজ্য সরকার তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে বলে, ইনফোসিস থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশের জন্য অক্ষতাকে কর দিতে হবে না।
প্রণয় থেকে পরিণয় সুনাক-অক্ষতার। যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে এমবিএ পড়ার সময় তাঁদের পরিচয়। সেখানেই প্রণয়ে জড়ান তাঁরা। ২০০৯ সালের আগস্টে ভারতে তাঁদের বিয়ে হয়। সেই বিয়েতে রাজনীতিক, শিল্পপতি, তারকাসহ হাজারখানেক অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এই দম্পতির আনুশকা ও কৃষ্ণা নামে দুই মেয়ে রয়েছে।
এই ঘটনায় তুমুল সমালোচিত হন সুনাক-অক্ষতা। সমালোচকেরা বলেন, এর মধ্য দিয়ে অর্থমন্ত্রীর স্ত্রীকে ২৮ কোটি পাউন্ডের আবাসিক কর দিতে হয়নি। যদিও তিনি স্বামী-সন্তান নিয়ে পাকাপাকিভাবে যুক্তরাজ্যেই বসবাস করছেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তাঁর আয়ের উৎস রয়েছে। করোনা-পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি যখন ধুঁকছে, তখন প্রভাবশালী রাজনীতিকের স্ত্রীর এমন কর মওকুফের ঘটনা নজিরবিহীন।
এসব আলোচনা-সমালোচনা সুনাকের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে প্রভাব ফেলেছিল।
বরিস জনসনের পদত্যাগের পর তুমুল লড়াই করেও চূড়ান্ত প্রার্থিতার দৌড়ে তিনি লিজ ট্রাসের কাছে হেরে যান। তবে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হলো না সুনাককে। ক্ষমতা নেওয়ার দেড় মাসের মাথায় লিজ ট্রাসও ক্ষমতা ছেড়েছেন। কপাল খুলেছে সুনাকের।
আজ মঙ্গলবার ইতিহাস গড়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। আর গতকালই বিবিসি অক্ষতাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে অক্ষতার জন্ম, বেড়ে ওঠা, পরিবার, ব্যবসায়িক জীবন, বিতর্ক-সমালোচনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।