ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের সাবেক রানি প্রথম এলিজাবেথের গোপন গুপ্তচর বাহিনী ছিল। গোপন এক নথি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই নথির নাম ‘দ্য নেমস অব দ্য ইন্টেলিজেন্সার্স’। এক পাতার ওই নথি ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে দেশটির ন্যাশনাল আর্কাইভসে সংরক্ষিত ছিল। দ্য গার্ডিয়ান–এর এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
রানি এলিজাবেথের গুপ্তচরের প্রধান হিসেবে কাজ করতেন রবার্ট সেসিল। গার্ডিয়ান–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এ নথি ৪২৮ বছরের পুরোনো। রবার্ট সেসিলের গোয়েন্দা প্রতিবেদনের অংশ এটি। এ ছাড়া সেসিল ১৬০৫ সালে রাজা প্রথম জেমসকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত গানপাউডার ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটন করেছিলেন। রানি এলিজাবেথের ওই নথি সেসিল যেভাবে সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন, তা থেকে ধারণা করা যায়, ইউরোপের রাজা ও রানিদের ওপর নজরদারি করতে সেসিল কীভাবে গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক কাজে লাগাতেন।
ইতিহাসবিদ স্টিফেন আলফোর্ড ১৫ বছর আগে এ তালিকা খুঁজে পেয়েছিলেন। তাঁর ধারণা, এটা ছিল ইংল্যান্ডের প্রথম সংগঠিত কোনো গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক। ওই নথি খুঁজে পাওয়ার পর আলফোর্ড সব গোয়েন্দার তথ্য একত্র করার কাজ করছেন।
আলফোর্ড বলেন, ‘ওই নথিতে যেসব গোয়েন্দার নাম আছে, তাঁদের কয়েকজনকে আমি চিনতে পারি। তাঁদের কেউ কেউ রানি এলিজাবেথের উপদেষ্টা বা তার কাছাকাছি ছিলেন। এ ছাড়া অনেককেই আমি চিনি না।’ তিনি আরও বলেন, তালিকায় নামের পাশে গোয়েন্দাদের বিশেষ নম্বর (ফোলিও) দেওয়া ছিল। গুপ্তচরদের তালিকাটি ভিক্টোরিয়ান আর্কাইভিস্টরা বিবিধ ফাইলে রেখেছিলেন। সেসিল ১৫৯৬ সালে এই নথি লেখা শুরু করেন।
আলফোর্ড বিভিন্ন পুরোনো আর্কাইভ ঘেঁটে গুপ্তচরদের তথ্য বের করার চেষ্টা করছেন। লন্ডন টাওয়ারে সংরক্ষণব্যবস্থা ভালো না থাকায় অনেক নথি নষ্ট হয়ে গেছে।
তবে আলফোর্ড গবেষণা করে দেখেছেন, সেসিল অনেকটাই সংগঠিত গোয়েন্দা বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। লিসবন, ক্যালাইস, ব্রাসেলস, সেভিল, রোম, আমস্টারডাম, স্কটল্যান্ড, সুইডেনসহ বিভিন্ন শহরে তাঁর ২০ জনের বেশি গুপ্তচর ছিল। আলফোর্ড বলেন, গুপ্তচর হিসেবে সেসিল ব্যবসায়ীদের বেছে নিতেন, কারণ তাঁরা ভ্রমণের পাশাপাশি লেখাপড়া জানতেন। তাঁরা ইউরোপের ভাষা জানতেন এবং তাঁদের নিজস্ব নেটওয়ার্ক ছিল।