পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে করা ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তি থেকে রাশিয়ার সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে দুর্ভাগ্যজনক ও দায়িত্বহীন বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেছেন, চুক্তির বিষয়টি নিয়ে মস্কোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত ওয়াশিংটন।
আজ মঙ্গলবার গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে মার্কিন দূতাবাসে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক যে পর্যায়ে থাকুক না কেন কৌশলগত অস্ত্রের সংখ্যা সীমিত করার বিষয়ে আমরা রাশিয়ার সঙ্গে যেকোনো সময় আলোচনায় বসতে এখনো প্রস্তুত আছি।’
এর আগে আজই বার্ষিক ‘স্টেট অব দ্য নেশন’ ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে শুধু এই চুক্তিটিই কার্যকর ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ ২০১০ সালে এই চুক্তিতে সই করেছিলেন।
ন্যাটোর প্রধান ইয়ানেস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ‘গত কয়েক বছরে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের মূল চুক্তিগুলো থেকে রাশিয়া হয় সরে গেছে, না হয় লঙ্ঘন করেছে। আর নিউ স্টার্ট চুক্তি নিয়ে তাদের আজকের সিদ্ধান্তে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পুরো কাঠামোটাই ভেঙে পড়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নিউ স্টার্ট চুক্তি থেকে রাশিয়ার সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দুর্ভাগ্যজনক ও দায়িত্বহীন। রাশিয়া আসলে কী করে তা দেখার জন্য আমরা সতর্ক নজর রাখছি। আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের নিরাপত্তার জন্য যে অঙ্গীকারবদ্ধ, তা যেকোনো পরিস্থিতিতে নিশ্চিত করব।’
রাশিয়ার এই ঘোষণায় প্রতিক্রিয়া এসেছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছ থেকেও। ন্যাটোর প্রধান ইয়ানেস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ‘গত কয়েক বছরে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের মূল চুক্তিগুলো থেকে রাশিয়া হয় সরে গেছে, না হয় লঙ্ঘন করেছে। আর নিউ স্টার্ট চুক্তি নিয়ে তাদের আজকের সিদ্ধান্তে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পুরো কাঠামোটাই ভেঙে পড়েছে।’
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ন্যাটোপ্রধান। সেখানে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ইইউয়ের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল ও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা। এ সময় জোসেপ বোরেল বলেন, ‘স্নায়ু যুদ্ধের পর থেকে যে নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল, তা ধ্বংস করছে রাশিয়া। নিউ স্টার্ট চুক্তি থেকে দেশটির সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা তাদের ওই তৎপরতার একটি প্রমাণ।’
এদিকে পুতিনের আজকের ভাষণের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়েরমাক এক টেলিগ্রাম বার্তায় বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো রাশিয়ার বাহিনীকে ইউক্রন থেকে বের করে দেওয়া এবং তাদের সব কাজের জন্য শাস্তি দেওয়া।’