ইউরোপের দেশ গ্রিসের পার্লামেন্টে সমলিঙ্গের বিয়ে বৈধ করে গতকাল বৃহস্পতিবার একটি বিল পাস হয়েছে। সেই সঙ্গে সমলিঙ্গের যুগলদের সন্তান দত্তক নেওয়ার অধিকারও দেওয়া হয়েছে। শক্তিশালী অথোর্ডক্স গির্জার বিরোধিতার পরও গ্রিসের রক্ষণশীল সরকার এ সংস্কারের পথে হেঁটেছে।
বিলটি আইন হিসেবে কার্যকর হলে সমলিঙ্গের বিয়েকে বৈধতা দেওয়া ৩৭তম দেশ হবে গ্রিস। সেই সঙ্গে অথোর্ডক্স খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মধ্যে গ্রিস প্রথম দেশ, যেটি সমলিঙ্গের যুগলদের সন্তান দত্তক নেওয়া সুযোগ দিচ্ছে।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিসের দল নিউ ডেমোক্রেসি পার্টির পক্ষ থেকে পার্লামেন্টে বিলটি উত্থাপন করা হয়েছিল। টানা দুই দিনের বিতর্কের পর গতকাল বিলের ওপর ভোটাভুটি হয়। এ সময় উপস্থিত ২৪৫ জন এমপির মধ্যে ১৭৬ জন সমলিঙ্গের বিয়ের বৈধতা ও দত্তক নেওয়ার পক্ষে ভোট দেন।
পরে এক এক্স বার্তায় প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিস বলেন, এটা মানবাধিকারের পক্ষে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। এর মধ্য দিয়ে উদারমনা, গণতান্ত্রিক ও ইউরোপীয় মূল্যবোধের প্রতি আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধাশীল আধুনিক গ্রিসের মনোভাব ফুটে উঠেছে।
ভোটাভুটি ও পরে ফলাফল ঘোষণার সময় অনেক মানুষ রাজধানী এথেন্সের কেন্দ্রস্থলে পার্লামেন্ট ভবনের সামনে জড়ো হন। তাঁদের অনেকেই এলজিবিটিকিউদের রংধনু পতাকা উড়িয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন।
ধারণা করা হয়েছিল, ক্ষমতাসীন নিউ ডেমোক্রেসি পার্টির কয়েক ডজন এমপি বিলের বিরোধিতা করবেন। তবে বিরোধী দলগুলো বিলের পক্ষে অবস্থান নিলে তা পাস করা সহজ হবে বলে মনে করা হয়েছিল।
বিলটি পাসে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিস। তিনি আইনপ্রণেতাদের প্রতি গ্রিক গণতন্ত্রের গুরুতর অসমতা দূর করার জন্য সাহসী পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন।
এমন উদ্যোগের ‘পূর্ণ বিরোধিতা’ করার কথা জানিয়েছে চার্চ অব গ্রিস। তাদের মতে, এর মাধ্যমে শিশুরা একটি দ্বিধার মধ্য দিয়ে বড় হবে। গির্জার প্রধান আর্চবিশপ ইয়েরোনিমোস প্রস্তাবিত আইনটিকে একটি ‘নতুন বাস্তবতা, যা শুধু দেশের সামাজিক সংহতিকে কলুষিত করতে চায়’ বলে মন্তব্য করেছেন।