ফ্রান্সে প্রথম দফার পার্লামেন্ট নির্বাচনে এগিয়ে থাকায় উগ্র ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র্যালির শিবিরে উদ্যাপন চলছে। প্রথম দফার নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার গঠনের দ্বার প্রান্তে পৌঁছে গেছে তারা। ৭ জুলাই দ্বিতীয় দফার ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
অভিবাসনবিরোধী দল ন্যাশনাল র্যালির (আরএন) নেত্রী মেরিন লা পেন বলেন, প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর জোটের প্রায় পুরোপুরি পতন ঘটেছে।
আরএন ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেতে যাচ্ছে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। বামপন্থী একটি জোট ২৮ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকছে। ২১ শতাংশ ভোট পেয়ে পিছিয়ে আছে মাখোঁর মধ্যপন্থী জোট।
আরএন দলের ২৮ বছর বয়সী নেতা জর্দান বারদেলা বলেন, ‘ফরাসি জনগণ যদি আমাদের ভোট দেয়, তবে আমি সব ফরাসি জনগণের প্রধানমন্ত্রী হতে চাই।’
রাজনীতি বিশ্লেষক অ্যালাইন দুহামেল বলেন, এর আগে ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফায় কট্টর ডানপন্থীরা কখনো জয়ী হয়নি। এবার আরএন জয়ী হলে তা একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হতে যাচ্ছে।
প্রথম দফার ভোট শেষে ইতিমধ্যে অর্ধেকের বেশি ভোট পেয়ে ন্যাশনাল র্যালির ৩৯ জন এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। আর বামপন্থী নিউ পপুলার ফ্রন্টের ৩২ জন নির্বাচিত হয়েছেন। আরএন নেতা মেরিন লা পেন ও জর্দান বারদেলা চাইছেন জাতীয় পরিষদের ৫৭৭ আসনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার জন্য দলটিকে ২৮৯ আসনে জয়ী হতে হবে।
তবে আগামী রোববার অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় দফার ভোট সামনে রেখে বিভিন্ন জরিপে আভাস দেওয়া হয়েছে, লা পেনের দল এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। আর কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট পাবে ফ্রান্স। আরএন তখন তাদের অভিবাসন, করের হার কমানো এবং আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত পরিকল্পনাগুলো পাস করাতে পারবে না।
১৯৯৭ সালের পর থেকে এবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি ছিল।এদিকে ডানপন্থী আরএন দলের সাফল্যে ক্ষুব্ধ বামপন্থী দলের সমর্থকেরা। ক্ষোভ জানাতে শত শত সমর্থক প্যারিসে জড়ো হয়েছিলেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল অতলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
নিজ বাসভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে দেওয়া বক্তব্যে অতল বলেছেন, ন্যাশনাল র্যালির কাছে আর একটি ভোটও যাওয়া উচিত নয়। ন্যাশনাল র্যালি যেন নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাচনে খারাপ ফলের জেরে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন মাখোঁ। একই সঙ্গে দেশটিতে আগাম নির্বাচনের ঘোষণাও দেন। তাঁর এ ঘোষণায় দেশটির অনেকেই হতবাক।