ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ড্যানিস শিমহাল বলেছেন, তাঁদের বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্র তাঁদের ছেড়ে যাবে না।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দুই বছর পূর্তিতে আয়োজিত ‘ইউক্রেন। বছর ২০২৪’ শিরোনামে আয়োজিত এক সম্মেলনে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সম্প্রতি মার্কিন সিনেট ৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বৈদেশিক সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে ইউক্রেনের জন্য ছয় হাজার কোটি ডলার বরাদ্দ রয়েছে। বিদেশি সহায়তার এই বিল এখন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়েছে।
ড্যানিস বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, ইউক্রেনকে আর্থিক, সামরিক ও সশস্ত্র সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটবে না।’
উল্লেখ্য, রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
এদিকে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী একই রুস্তেম উমেরভ বলেছেন, ইউক্রেনকে দেওয়া পশ্চিমা সামরিক সহায়তার অর্ধেক এসেছে প্রতিশ্রুত সময়েরও পর। এই বিলম্ব রুশ আক্রমণের বিরুদ্ধে কিয়েভের আত্মরক্ষার সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে এবং ইউক্রেনের নাগরিকদের জীবন দিয়ে এর মূল্য দিতে হয়।
রুস্তেম বলেন, এই মুহূর্তে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অস্ত্র সরবরাহ হচ্ছে না। যেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তার ৫০ শতাংশ সময়মতো সরবরাহ করা হয়নি।
এদিকে ইউরোপও স্বীকার করেছে, মার্চের মধ্যে ইউক্রেনকে যে ১০ লাখের বেশি আর্টিলারি শেল সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল, বাস্তবে সেই সংখ্যা অনেকটাই কম হবে। তাদের আশা, বছরের শেষ নাগাদ পুরো চালান দিতে পারবে।
রুস্তেম বলেন, এ ধরনের বিলম্ব রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের হিসাবনিকাশ পাল্টে দেয়।
আকাশপথে রাশিয়ার ব্যাপক সামরিক সক্ষমতাকে বিবেচনায় নেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, সাহায্য আসতে যত বিলম্ব হবে, ইউক্রেনে ততই প্রাণহানি বাড়বে ও আরও ভূখণ্ড হারাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা যা করতে পারি এবং যা করতে পারি না, তার সবকিছুই করি, কিন্তু সময়মতো সরবরাহ (অস্ত্র) না পেলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই।’
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রাশিয়া। দ্রুত দেশটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার লক্ষ্য থাকলেও প্রথম দিকে ইউক্রেনীয়দের ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়ে রুশ বাহিনী। তবে ধীরে ধীরে নিজেদের অবস্থান শক্ত করে তারা। বর্তমানে ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ এলাকা রুশ বাহিনীর দখলে রয়েছে। সম্প্রতি দেশটির পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর আভদিভকা দখলে নেন রুশ সেনারা।
বিদেশি সহায়তায় টান, অস্ত্রের ঘাটতি ও রাশিয়ার অগ্রগতিসহ নানা সমস্যার মুখে রয়েছে ইউক্রেন বাহিনী। এরই মধ্যে নিয়মিত তাদের ওপর হামলা হচ্ছে। সবশেষ যুদ্ধের তৃতীয় বছর শুরু হতেই রাতভর দেশটির ওদেসা, নিপ্রোসহ বিভিন্ন অঞ্চলে রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।