যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন ও ইউরোপের মার্কিন মিত্রদের দৃষ্টিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একজন ‘অত্যাচারী শাসক’ ও ‘যুদ্ধাপরাধী’। কিন্তু লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে? দেশটির ক্ষমতা কাঠামোয় পুতিন এমন ব্রাত্য নন। তাই তো ব্রাজিলে ক্ষমতাসীনেরা পুতিনকে তাঁদের দেশে আমন্ত্রণ জানান।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেছেন, ইউক্রেনে এখন যে যুদ্ধ চলছে, সেটার পেছনে রাশিয়া ও ইউক্রেন—উভয় দেশেরই দায় রয়েছে। যুদ্ধের মধ্যেও তাঁর দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি ও সার কেনা বাড়িয়েছে। এতে রুশ অর্থনীতিতে কোটি কোটি ডলার যুক্ত হচ্ছে।
ইউক্রেনের ভূখণ্ডে রুশ বাহিনীর সর্বাত্মক হামলার পর শুরু হওয়া যুদ্ধ তৃতীয় বছরে পড়েছে। এমন সময়ে এসে রাশিয়ার বিষয়ে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের এমন মনোভাবে বৈশ্বিক বাস্তবতা অনেকটাই উঠে এসেছে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ইউক্রেনে সর্বাত্মক হামলা শুরু করেছিল রাশিয়া। এরপরই বাইডেন প্রশাসন রাশিয়ার বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক কূটনীতির কৌশল বেছে নেয়। তখন ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর জন্য অস্ত্র পাঠানোর ক্ষেত্রে এমন কৌশল বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।
হামলার শুরুর পরপরই রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। আন্তর্জাতিক নিয়ম-শৃঙ্খলা রক্ষায় মস্কোর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। যুদ্ধ শুরুর কারণে রাশিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে শাস্তি দিতে চেয়েছিল ওয়াশিংটন। আর রাজনৈতিকভাবে রাশিয়াকে একঘরে করতে চেয়েছিল তারা। এ জন্য বিভিন্ন কোম্পানি ও দেশ মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে।
যুদ্ধ শুরুর বছর দুয়েক পর দেখা গেল, মার্কিন কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী পুতিন একঘরে হননি। পুতিনকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করাও যায়নি।
তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বিপুল সরবরাহের কারণে রাশিয়ার অর্থনীতির যে অন্তর্নিহিত শক্তি আছে, সেটাও টলানো যায়নি। এই আত্মবিশ্বাস রাশিয়ায় এমন একটা আর্থিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা তৈরি করেছে, যার ফলে মস্কো প্রতিনিয়ত পশ্চিমা বিরোধিতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যাচ্ছে।
এশিয়ার কিছু অংশ, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকায় পুতিন ও রাশিয়ার প্রভাব বরাবরের মতো শক্তিশালী। সেটা ক্রমে বাড়ছে। সেই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে ক্ষমতার ওপর পুতিনের নিয়ন্ত্রণ আগের মতোই শক্তিশালী বলে মনে করা হচ্ছে।
অর্থনীতি কিংবা কূটনীতি, কোনোভাবেই রাশিয়াকে আটকে রাখা যায়নি।—মাইকেল কিমানগে, ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি অব আমেরিকার স্নায়ুযুদ্ধ-বিষয়ক ইতিহাসবিদ
চীন, ভারত ও ব্রাজিল—এই তিন দেশ রাশিয়া থেকে কম দামে বিপুল পরিমাণে জ্বালানি তেল কিনেছে, কিনছে। যুদ্ধের কারণে ইউরোপে যে জ্বালানির বাজার হারিয়েছে রাশিয়া, সেটা এই তিন দেশকে দিয়ে পূরণ করে নিতে চাইছেন পুতিন। এসব দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি পোক্ত কূটনৈতিক বন্ধুত্ব রয়েছে মস্কোর।
২০২৪ সালের নভেম্বরে ব্রাজিলে বসবে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। তাতে পুতিনকে অংশ নেওয়া জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন লুলা দা সিলভা। ব্রাজিল আন্তর্জাতিক আদালতের সদস্য। পুতিনের বিরুদ্ধে আরোপ করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরে বাধ্য দেশটি। এরপরও লুলা দা সিলভা রুশ নেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
যদিও অনেকে ওয়াশিংটনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবেও পরিচিত।
গত বছরের অক্টোবরে চীনের বেইজিং সফর করেন পুতিন। ডিসেম্বরের শেষ দিকে তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে মস্কোয় স্বাগত জানান। এরও কয়েক সপ্তাহ আগে পুতিন যান মধ্যপ্রাচ্যে। সংযুক্ত আরব আমিরাত আর সৌদি আরবে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।
রাশিয়ার প্রভাব আফ্রিকার দেশগুলোয়ও বিস্তৃত হয়েছে। লন্ডনভিত্তিক নিরাপত্তা-সংক্রান্ত গবেষণাপ্রতিষ্ঠান দ্য রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।
ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন গত গ্রীষ্মে মারা যাওয়ার পর আফ্রিকায় বাহিনীটির বর্ধিত কার্যক্রমের ভার নেয় রুশ সামরিক গোয়েন্দা পরিষেবা। সেই সঙ্গে আফ্রিকার যেসব দেশ নিরাপত্তার জন্য ভাগনারের ওপর নির্ভর করত, তাদের সঙ্গে রাশিয়ার পক্ষ থেকে যোগাযোগ বাড়ানো হয়।
ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি অব আমেরিকার স্নায়ুযুদ্ধ-বিষয়ক ইতিহাসবিদ মাইকেল কিমানগে। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। মাইকেল কিমানগে বলেন, ‘অর্থনীতি কিংবা কূটনীতি, কোনোভাবেই রাশিয়াকে আটকে রাখা যায়নি।’
চীন, ভারত ও ব্রাজিল—এই তিন দেশ রাশিয়া থেকে ছাড়কৃত দামে বিপুল পরিমাণে জ্বালানি তেল কিনেছে, কিনছে। যুদ্ধের কারণে ইউরোপে যে জ্বালানির বাজার হারিয়েছে রাশিয়া, সেটা এই তিন দেশকে দিয়ে পূরণ করে নিতে চাইছেন পুতিন। এসব দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি পোক্ত কূটনৈতিক বন্ধুত্ব রয়েছে মস্কোর।
অন্যদিকে রাশিয়ার বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অনেক নেতা এ বাস্তবতা ঠিকমতো উপলব্ধি করতে পারেননি।
ওয়াশিংটনভিত্তিক থিঙ্কট্যাংক কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের বিশ্লেষক ইউজিন রুমার ও অ্যান্ড্রু এস ওয়েইস গত নভেম্বরে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন, ‘পশ্চিমা নেতারা স্পষ্টত রাশিয়ার হুমকির স্থায়ী প্রকৃতি নিয়ে নিজেদের জনসাধারণের সঙ্গে কোনো কিছু ভাগাভাগি করেননি। এটা একটা বড় ভুল ছিল।’
তাঁদের মতে, পুতিনের চিন্তাভাবনা ও প্রভাব জাদুকরি। এর বড় প্রমাণ, লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় ও বিশ্বের বুকে অন্যতম প্রভাবশালী দেশ ব্রাজিলে পুতিনকে স্বাগত জানানোর ঘোষণা। লুলা দা সিলভা জানিয়ে দিয়েছেন, চলতি বছর ব্রাজিলে হতে যাওয়া জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে এলে পুতিনকে গ্রেপ্তার করা হবে না। বিষয়টি পশ্চিমাদের হতাশার কারণও বটে।
২০২৪ সালের নভেম্বরে ব্রাজিলে বসবে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। তাতে পুতিনকে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন লুলা দা সিলভা। ব্রাজিল আন্তর্জাতিক আদালতের সদস্য। পুতিনের বিরুদ্ধে আরোপ করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরে বাধ্য দেশটি। এরপরও লুলা সম্মেলনে রুশ নেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
ইউক্রেন ইস্যুতে ক্রমাগত নিরপেক্ষ নীতিতে অটুট থাকার চেষ্টা করছে ব্রাজিল। সম্প্রতি ব্রাজিলের রাজধানীতে লুলা দা সিলভার সঙ্গে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের এক বৈঠকেও এমনটা দেখা গেছে। ব্রাজিলের এমন অবস্থানের সমালোচনা করেছে ইউক্রেন।
অন্যদিকে শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিতে বিবদমান পক্ষগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ব্রাজিল। সমালোচনা করেছে মার্কিন নীতিরও। ব্রাজিলের সরকারের মতে, কিয়েভকে ক্রমাগতভাবে অস্ত্র সহায়তা দিয়ে চলমান যুদ্ধে ইন্ধন জোগাচ্ছে ওয়াশিংটন।
ব্রাসিলিয়ায় বৈঠক সেরে রিও ডি জেনেরিওতে যান ব্লিঙ্কেন। অংশ নেন জি-২০ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে। সেখানে ব্রাজিলের শীর্ষ কূটনীতিক মাউরো ভিয়েইরা বলেন, তাঁর দেশ এমন কোনো বৈশ্বিক পরিস্থিতি মেনে নেবে না, যেখানে মতবিরোধ মোকাবিলায় সামরিক শক্তি ব্যবহার করা হয়।
ওই বৈঠকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ উপস্থিত ছিলেন। ব্লিঙ্কেনসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার কড়া সমালোচনা করেন। বিপরীতে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে কয়েকটি দেশ এ ইস্যুতে নিরপেক্ষতা দেখান কিংবা পুরোপুরি নীরব থাকেন।
যদিও গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন জোর দিয়ে বলেন, জি-২০-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকজুড়ে সম্মিলিত সমালোচনা শুনেছেন লাভরভ। ইউক্রেনে ‘রুশ আগ্রাসনের অবসানের অপরিহার্যতা’ নিয়ে সেখানে সবাই মিলে জোরালোভাবে বলা হয়েছিল।
এর আগে গত বছর জি-২০-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এ বৈঠক বসেছিল ভারতে। সেখানে ছিলেন লাভরভ। ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা, সুদান, কেনিয়াসহ আফ্রিকা মহাদেশে এক ডজনের বেশি দেশে ভ্রমণ করেছেন তিনি। গত বছরের এপ্রিলে ব্রাজিলে নিজের সরকারি প্রাসাদে লাভরভকে স্বাগত জানিয়েছেন লুলা দা সিলভা নিজেও। এখন আবারও ব্রাজিলে সফর করলেন লাভরভ।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন লাভরভ। এ সময় তিনি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে দেখা করেছেন। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি ছবি প্রকাশ করেছে। এতে গুতেরেস ও লাভরভকে আন্তরিকভাবে করমর্দন করতে দেখা গেছে।
ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের সমালোচনা করে ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে জাতিসংঘে যেসব প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে, সেসব যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত নয়, এমন দেশগুলোর সামান্য সমর্থন পেয়েছে। এতে স্পষ্ট হয়, দেশগুলো সুনির্দিষ্ট পক্ষ নিতে আর আগ্রহী নয়।
এ বিষয়ে ওয়াশিংটনভিত্তিক সেন্টার ফর দ্য ইউরোপিয়ান পলিসি অ্যানালাইসিসের প্রেসিডেন্ট অ্যালিনা পলিয়াকোভা বলেন, পরাশক্তিগুলোর প্রতিযোগিতায় দাবার ঘুঁটি হওয়ার বিষয়ে কিছু দেশ ভীত। তা ছাড়া এমন অনেক দেশে কয়েক দশক ধরে রাশিয়া বিপুল বিনিয়োগ করেছে।
অভিযোগ ছিল, রাশিয়ার খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির দাম অনেক বেশি। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর এমন অভিযোগ খণ্ডাতে উদ্যোগী হয় মস্কো। কয়েক সপ্তাহ আগে নাইজেরিয়ায় ৩৪ হাজার টন সার বিনা মূল্যে সরবরাহ করেছে রাশিয়া। এ ছাড়া আফ্রিকার আরও কয়েকটি গন্তব্যেও সারের এমন চালান পাঠানো হয়েছে।
পুতিন এত বড় খরচের ধাক্কা অনায়াসে সামলাতে পারেন। এমনকি যুদ্ধের জেরে পূর্ব ইউরোপে যেসব ক্রেতা হারিয়েছিল রাশিয়া, অন্য মহাদেশের বাজারে বাড়তি জ্বালানি রপ্তানি করে, সেই ধাক্কাও পুষিয়ে নিতে পেরেছে রাশিয়া।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা আইইএ গত মাসের প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়া প্রতিদিন ৭৮ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল রপ্তানি করেছে। এর আগের নয় মাসের মধ্যে এটা সর্বোচ্চ। যদিও ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর আগের দৈনিক রপ্তানির পরিমাণের চেয়ে এটা সামান্য কম।
তবে লক্ষণ সুস্পষ্ট। জ্বালানি তেলের রপ্তানির পরিমাণে যুদ্ধের ধাক্কা ক্রমে সামলে উঠছে মস্কো। যদিও গত বছরের ডিসেম্বরে জ্বালানি তেল রপ্তানিতে রাশিয়ার রাজস্ব আয় দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে, যা ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।
আইইএ বলেছে, রুশ জ্বালানি তেলের মূল্যসীমা কার্যকর করার বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রচেষ্টা রাশিয়ার সামগ্রিক জ্বালানি রাজস্বে আঘাত করেছে বলে মনে করছেন অনেকেই। যেমন অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক বাজারেও দাম অনেকটাই কমে গেছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বাত্মক হামলার ঘটনায় জো বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, বাইডেনের এ অবস্থানে আখেরে রাশিয়ার লাভ হয়েছে।
কেননা, গাজায় হামলার ঘটনায় ইসরায়েলের পাশে আছেন বাইডেন। কিন্তু একই সঙ্গে ইউক্রেনে হামলা করতে পুতিনের কড়া সমালোচনা করে যাচ্ছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে বাইডেন ও তাঁর প্রশাসনের দ্বিমুখী মনোভাব প্রকাশ হয়ে পড়েছে।
পাশাপাশি ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ অংশীদারদের সঙ্গে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করতে সফল হয়েছে রাশিয়া। একে ‘নতুন কর্তৃত্ববাদী জোট’ বলে চিহ্নিত করেছেন অ্যালিনা পলিয়াকোভা। যেমন চীন, উত্তর কোরিয়া ও ইরান। এসব দেশের সঙ্গে মিত্রতা মস্কোকে বিভিন্ন কৌশলে সহায়তা করে চলেছে।
ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়াকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। ইরান পাঠিয়েছে আক্রমণাত্মক ড্রোন। রাশিয়ার কাছে অস্ত্র রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকা অবস্থায়ও নানা সরঞ্জাম দিয়েছে বেইজিং। যদিও চীনের দাবি, সরাসরি যুদ্ধে ব্যবহার হয় বা বেসামরিক মানুষদের হতাহতের কারণ হতে পারে, এমন আক্রমণাত্মক কোনো অস্ত্র তারা মস্কোর হাতে তুলে দেয়নি।
অনুবাদ করেছেন: অনিন্দ্য সাইমুম