পুতিনের বিচার চান ইউক্রেনের নোবেলজয়ী সংগঠনের প্রধান

ইউক্রেনের নোবেলজয়ী মানবাধিকার সংগঠন সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিসের (সিসিএল) প্রধান ওলেকসান্দ্রা মাতভিচুক
ফাইল ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে তাঁর বিচার চেয়েছেন ইউক্রেনের নোবেলজয়ী মানবাধিকার সংগঠন সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিসের (সিসিএল) প্রধান ওলেকসান্দ্রা মাতভিচুক। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার নরওয়ের রাজধানী অসলোতে ২০২২ সালের নোবেল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আগে সাংবাদিকদের কাছে এই দাবির কথা জানান তিনি।

এ বছর সিসিএলের সঙ্গে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পেয়েছে বেলারুশের মানবাধিকারকর্মী অ্যালেস বিয়ালিয়াৎস্কি ও রাশিয়ার মানবাধিকার সংগঠন মেমোরিয়াল। বেলারুশ, রাশিয়া ও ইউক্রেনে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখায় তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

ওলেকসান্দ্রা মাতভিচুক বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী যুদ্ধাপরাধ করছে। তবে তাদের কখনো শাস্তির মুখে পড়তে হয়নি। তাদের এই দায়মুক্তি দেওয়া আমাদের বন্ধ করতে হবে। আমাদের অবশ্যই একটি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে এবং পুতিন, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্দার লুকাশেঙ্কো ও অন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

মানবাধিকার সংগঠন সিসিএল প্রতিষ্ঠা হয় ২০০৭ সালে। ওলেকসান্দ্রা মাতভিচুকের নেতৃত্বে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের ঘটনাগুলো সংগ্রহ করছে তারা। তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধের ধরন একটি গণহত্যার মতো। ইউক্রেন যদি প্রতিরোধ কমিয়ে দেয়, তাহলে আমাদের কেউ আর বেঁচে থাকবে না।’

বক্তব্যে সমঝোতার মাধ্যমে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোয় অনীহা প্রকাশ করেন সিসিএল প্রধান। ক্রিমিয়াসহ ইউক্রনে রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চলগুলো মুক্ত করতে পশ্চিমাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, ‘পুতিনকে যখন থামানো হবে, তখনই তিনি থামবেন। সমঝোতার কোনো প্রচেষ্টাকে কর্তৃত্ববাদী নেতারা দুর্বলতা হিসেবে দেখেন।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ওলেকসান্দ্রা মাতভিচুকের পাশেই ছিলেন রাশিয়ার নোবেলজয়ী মানবাধিকার সংগঠন মেমোরিয়ালের বোর্ড চেয়ারম্যান ইয়ান র‍্যাচিনস্কি। তিনিও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। তবে এই যুদ্ধাপরাধী কারা, তা অবশ্য স্পষ্ট করে বলেননি। ইয়ান র‍্যাচিনস্কি বলেন, ‘এখনই তাঁদের শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। কারণ, এমন অনেক উদাহরণ আছে যে অপরাধীদের শাস্তি হচ্ছে না এবং নিরাপত্তার সঙ্গে নিজেদের বাড়ির বিছানায় তাঁদের মৃত্যু হচ্ছে।’

এদিকে এ বছর যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পাওয়া বেলারুশের মানবাধিকারকর্মী অ্যালেস বিয়ালিয়াৎস্কি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তাঁর হয়ে নোবেল পুরস্কার নিতে এসেছেন তাঁর স্ত্রী নাতালিয়া পিনচুক। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনকে বেলারুশের মতো ‘পরনির্ভরশীল একনায়কতন্ত্রের’ দেশে পরিণত করতে চায়।