ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সক্ষমতার সমালোচনা করেছেন চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ। সপ্তাহান্তে ইজিয়ুমের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর এ সমালোচনা করেন তিনি। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ প্রদেশের ইজিয়ুমকে গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। খবর আল-জাজিরার।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মিত্র হিসেবে পরিচিত কাদিরভ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে গত শনিবার ১১ মিনিট দীর্ঘ একটি ভয়েস মেসেজ পোস্ট করেন তিনি। এতে কাদিরভ স্বীকার করেন, রাশিয়ার এ সামরিক অভিযান পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে না।
মস্কোর নিয়োগ দেওয়া চেচেন নেতা বলেন, ‘আজ বা কাল বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনায় যদি পরিবর্তন আনা না হয়, তাহলে মাঠের অবস্থা ব্যাখ্যা করতে আমরা দেশের নেতৃত্বের কাছে যেতে বাধ্য হব।’
হারানো সব এলাকায় রুশ নিয়ন্ত্রণ ফেরাতে হবে জানিয়ে কাদিরভ বলেন, ‘যাঁরা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে আছেন, আমি তাঁদের মতো কৌশলবিদ নই। তবে এটা স্পষ্ট, কিছু ভুল হয়েছে। আমি মনে করি, তাঁরা এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন।’
চেচেন নেতা আরও বলেন, ‘সেখানে আমাদের লোক আছে। যোদ্ধারা এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত। ১০ হাজার যোদ্ধা তাদের সঙ্গে যোগ দিতে প্রস্তুত আছে। অদূর ভবিষ্যতে আমরা ওদেসায় পৌঁছাব।’
আগ্রাসনের বিরুদ্ধে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর পাল্টা হামলায় রুশ সেনা নেতৃত্ব অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে রুশ বাহিনীর সমালোচনায় মুখর হয়েছেন কাদিরভ।
ইউক্রেন যুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় নিশ্চিত করতে পুতিনকে অবিলম্বে পরিবর্তন আনার জন্য অনেকটা ক্ষোভের সুরে গতকাল রোববার আহ্বান জানিয়েছে রুশ জাতীয়তাবাদীরা। আগের দিন উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনে নিজেদের প্রধান ঘাঁটি পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল মস্কো।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। মার্চে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে সেনা সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল মস্কো। এরপর দ্রুততম সময়ে ইজিয়ুমের পতন রাশিয়ার সবচেয়ে মারাত্মক সামরিক পরাজয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
এ পরাজয়ের বিষয়ে মস্কো অনেকটাই চুপ রয়েছে। উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনে কী ঘটেছে, সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিচ্ছে না। এতে যুদ্ধপন্থী ভাষ্যকার ও রুশ জাতীয়তাবাদীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
পরাজয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই গত শুক্রবার একটি ভিডিও প্রকাশ করে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা জানিয়েছে, খারকিভ অঞ্চলে সেনা পাঠানো হচ্ছে। গতকাল মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনীয় বাহিনীর অবস্থানে আঘাত হেনেছে রুশ বাহিনী। হামলায় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলা ব্যবহারের পাশাপাশি এয়ারবর্ন সেনারা অংশ নিয়েছেন।