রাশিয়ার হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘কিনঝাল’ দেখলেন, সফররত উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উন। পাশাপাশি পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম কৌশলগত বোমারু বিমানও দেখেছেন তিনি। কিম তাঁর এই সফরে রাশিয়ার সুদূর পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত মহাকাশ গবেষণাপ্রতিষ্ঠান, সামরিক ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত স্থাপনাও পরিদর্শন করছেন।
কিম গতকাল শনিবার ভ্লাদিভস্তক থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত আর্তিয়ম শহরে পৌঁছান বলে জানান রাশিয়ার প্রিমোরস্কি অঞ্চলের গভর্নর ওলেগ কোঝেমিয়াকো। গভর্নরের প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, হাস্যোজ্জ্বল কিম তাঁর সুরক্ষিত ব্যক্তিগত ট্রেনে করে সেখানে পৌঁছান। শিশুরা তাঁকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে।
আর্তিয়ম পৌঁছানোর পর শহরের ঠিক উপকণ্ঠে অবস্থিত ভ্লাদিভস্তক বিমানবন্দরে যান উত্তর কোরীয় নেতা। সেখানে তাঁকে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম রাশিয়ার কৌশলগত বোমারু বিমান এবং অন্যান্য যুদ্ধবিমান দেখানো হয়। এ সময় রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু ও অন্য জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কিমকে রাশিয়ার হাইপারসনিক কিনঝাল ক্ষেপণাস্ত্র দেখান শোইগু। কিনঝাল মানে চাকু। এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রথাগত ওয়ারহেডের পাশাপাশি পারমাণবিক অস্ত্র বহনেও সক্ষম। দেড় থেকে দুই হাজার কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রটি ৪৮০ কেজি বিস্ফোরকবাহী ওয়ারহেড বহন করতে পারে। শব্দের চেয়ে ১০ গুণ গতিতে ছুটতে পারে কিনঝাল ক্ষেপণাস্ত্র।
কিমকে কৌশলগত বোমারু বিমান টিইউ-১৬০, টিইউ-৯৫ এবং টিইউ-২২এম৩ মডেলগুলো দেখানো হয়। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে নিয়মিতই এসব বোমারু বিমান ব্যবহার করা হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, এসব যুদ্ধবিমান থেকে কীভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, তা জানতে চান কিম। একজন রুশ কর্মকর্তা বলেন, কৌশলগত বোমারু বিমান দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
গত বুধবার রাশিয়া সফর শুরু করেন উত্তর কোরীয় নেতা। এদিন রাশিয়ার মহাকাশযান উৎক্ষেপণকেন্দ্র ভস্তোচনি কসমোড্রোমে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন কিম। গত শুক্রবার তাঁকে রাশিয়ার সুদূর পূর্বাঞ্চলীয় একটি শহরে সু-৫৭ যুদ্ধবিমান তৈরির কারখানা পরিদর্শন করতেও দেখা যায়।
কিমের রাশিয়া সফর নিয়ে শুরু থেকেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। এই সফরের আগেই যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনতে পারে রাশিয়া। এ নিয়ে ইতিমধ্যে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছে পশ্চিমা বিশ্ব।
এ ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার এক মন্ত্রী বলেছেন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্ভবত গোপনে কোনো সামরিক বোঝাপড়া চলছে।