২০১৫ সালে লন্ডন থেকে সিরিয়ায় পাড়ি জমানো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ স্কুলছাত্রী শামীমা বেগমের যুক্তরাজ্য সরকার কর্তৃক নাগরিকত্ব বাতিলের বিরুদ্ধে আদালতে শুনানি চলছে। বর্তমানে কার্যত রাষ্ট্রহীন শামীমাকে তাঁর মা–বাবার দেশ বাংলাদেশে পাঠানো হলে সেখানে তাঁর মৃত্যুদণ্ড হবে বলে শুনানিতে বলা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিল কমিশনে (সিয়াক) ২৩ বছর বয়সী এ তরুণীর আইনি আবেদনে বলা হয়, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ ২০১৯ সালে শামীমা বেগমের যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব বাতিলের ‘গুরুতর বাস্তব পরিণতি’ বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।
আদালতের আপিল শুনানিতে শামীমার পক্ষের আইনজীবী ড্যান স্কয়ারেস কেসি বলেন, এটা স্পষ্ট যে নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত শামীমা বেগমকে কার্যত রাষ্ট্রহীন করে তুলবে এমন সম্ভাবনার কথা সাজিদ জাভিদ বিবেচনা করেননি। এমনকি তিনি এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের মনোভাব জানার চেষ্টাও করেননি।
আদালতের দাখিল করা নথিতে দেখা গেছে, শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব বাতিল হওয়ার আগের দিনই তার রাষ্ট্রহীনতা নিশ্চিত করা হয়েছিল। তিনি বলেন, এসব বিষয়ের মধ্যে বড় প্রশ্ন হচ্ছে শামীমা বেগমকে তাঁর মা–বাবার সূত্রে বাংলাদেশ নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেবে কি না এবং কোনো সুরক্ষা বা ব্যবহারিক সহায়তা প্রদান করবে কি না?
কারণ, ২০১৯ সালের মে মাসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশ্চিত করেছিলেন যে শামীমা বেগম বাংলাদেশে গেলে সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার জন্য মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন।
আপিল শুনানিতে শামীমা বেগমে আইনজীবী আরও বলেন, এটা স্পষ্ট যে সাজিদ জাভিদ যদি আপিলকারীকে তাঁর নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করার বাস্তব প্রভাব সম্পর্কে অনুসন্ধান করতেন, তবে তিনি সম্ভবত বুঝতে পারতেন যে আপিলকারীকে কোনো রাষ্ট্রের সুরক্ষা ছাড়াই ছেড়ে দেওয়া যায় না। তাঁর অন্তত এটুকু বোঝা উচিত ছিল যে একজন রাষ্ট্রহীন মানুষের বাস্তব জীবন কেমন হতে পারে।
ইংল্যান্ডের নিযুক্ত আইনজীবী যুক্তিতর্কে বলেন, বিষয়টি কি এমন যে সেক্রেটারি অব স্টেট তাঁর দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনো নাগরিকের নাগরিকত্ব বাতিলের পূর্বে অন্য দেশের সরকারের মতামত নেবে?
২০১৫ সালে বয়সী স্কুলছাত্রী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগম জঙ্গি দল ইসলামিক স্টেট (আইএস) প্ররোচনায় সিরিয়ায় পাড়ি জমান। সেখানে তিনি ইসলামিক স্টেটের এক যোদ্ধাকে বিয়ে করেন।