সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনের যৌথ ঘোষণাপত্রে ভারত, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও সৌদি আরবের মতো আঞ্চলিক শক্তিসহ আরও কিছু দেশ স্বাক্ষর করেনি। এই সব দেশ ঘোষণাপত্রের ইউক্রেনের ‘ভূখণ্ডের অখণ্ডতার’ বিষয়ে একমত হতে পারেনি। তবে, ৮০টির বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছে।
সম্মেলন শেষে গতকাল রোববার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, শান্তি অর্জনের পথে এটি প্রথম পদক্ষেপ। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সব দেশের যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর না করাটা দুঃখজনক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এখনো কিছু দেশ ভারসাম্য রক্ষা করে চলার চেষ্টা করছে। তবে যেসব দেশ জাতিসংঘের সনদকে সম্মান করে, সেসব দেশ চাইলে পরবর্তীতেও এই যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে পারবে।
গত শনিবার সুইজারল্যান্ডের বুর্গেনস্টকের পাহাড়ের ওপরে একটি রিসোর্টে দুই দিনের ইউক্রেন শান্তি সম্মেলন শুরু হয়। এতে প্রায় ১০০টি দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধি অংশ নেন।
রাশিয়াকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। চীনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া ছাড়া এ ধরনের শান্তি সম্মেলন অর্থহীন মন্তব্য করে তাতে অংশ নেয়নি বেইজিং।
পশ্চিমা বিশ্বের কূটনীতিকরা সম্মেলনটি নিয়ে বেশ আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অধিকাংশই ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশের মিত্র। দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও এশিয়ারও বেশ কিছু দেশ সম্মেলনটিতে অংশ নিয়েছে।
যৌথ ঘোষণাপত্রে তুরস্কের স্বাক্ষর করাটা ছিল বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ। ন্যাটোভুক্ত দেশটির সঙ্গে রাশিয়ার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। দেশটি রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবেও কাজ করতে চেষ্টা করছে।
যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরকারী আরও কিছু দেশ হলো আর্জেন্টিনা, ইরাক, কাতার ও রুয়ান্ডা।
সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেও স্বাক্ষর করেনি এমন দেশগুলোর মধ্যে ভারত, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও সৌদি আরবের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) অন্যতম।
সম্মেলন শেষে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেন, ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে সময় লাগবে। পুতিন যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে আগ্রহী নয়। তাই এটি ঠিক শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে দর-কষাকষি করার কোনো সম্মেলন ছিল না।
গত শনিবার সম্মেলনটি শুরু আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, পূর্ব ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চল রুশ সেনারা প্রায় দখল করেছে, সেখান থেকে কিয়েভকে সব সেনা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আশা ছেড়ে দিতে হবে। এসব শর্ত মেনে নিলে ইউক্রেনের সঙ্গে যে কোনো সময় শান্তি আলোচনা হতে পারে।