রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কুরচাতভ শহরে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। শহরটিতে দেশটির অন্যতম বড় একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অবস্থিত। তবে এ হামলার ঘটনায় ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে রুশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গভর্নর রোমান স্তারোভোইত বলেন, আজ শুক্রবার দিনের শুরুতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় কুরচাতভ শহরের একটি ভবনের কাচের দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবনটি থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরেই কুরস্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অবস্থিত।
প্রথমে স্তারোভোইত কোনো ধরনের ড্রোন হামলার ঘটনা অস্বীকার করেন। পরে তিনি বলেন, হামলায় কেউ হতাহত হননি। কুরস্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্ভাব্য কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কিছু বলেননি গভর্নর।
সোভিয়েত আমলের কুরস্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রযুক্তিতে তৈরি। ১৯৮৬ সালে চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিস্ফোরণ ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বিপর্যয়কর পারমাণবিক দুর্ঘটনা।
এর আগে জাপোরিঝঝিয়ায় ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলার ষড়যন্ত্র করার জন্য কিয়েভ ও মস্কো পরস্পরকে অভিযুক্ত করেছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলার পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক স্থাপনাটি দখল করে নেয় রুশ বাহিনী।
এ ছাড়া শুক্রবার সকালে মস্কো অভিমুখী আরেকটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয় বলে জানিয়েছেন শহরের মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন। এতে মস্কোর একটি বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামা বিঘ্নিত হয়।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলে রাশিয়ার শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যূহ ভেদ করে সামনে অগ্রসর হওয়ার দাবি করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। কিয়েভ যে মস্কোর দক্ষিণ ফ্রন্টে সুরক্ষিত পরিখার বিস্তৃত নেটওয়ার্কের কাছাকাছি এগোচ্ছে, এটি তারই ইঙ্গিত।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, রোবোতিন শহরের পূর্বে নভোপ্রোকোপিভকা গ্রামের দিকে অগ্রসর হচ্ছে তারা। চলমান পাল্টা আক্রমণের মধ্যে গত সপ্তাহে রোবোতিন শহর পুনরুদ্ধার করেছিল কিয়েভ বাহিনী।
শুক্রবার ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ বলেছেন, সেনারা সফল হয়েছেন। তাঁরা নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করছেন। শত্রুর অবস্থান শনাক্ত করে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছেন।
ইউক্রেনের সেনারা বলছেন, রাশিয়ার পরবর্তী স্তরের প্রতিরক্ষা ব্যূহের দিকে অগ্রসর হতে থাকায় গ্রামটির দক্ষিণ ও পূর্বে উঁচু এলাকার দখল নিয়ে বড় ধরনের লড়াইয়ের আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশটির সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্য, রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে ‘স্থলসংযোগ’ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া।