আকাশে পুলিশের হেলিকপ্টার, ক্যামেরাযুক্ত গোটা দশেক ড্রোন আর জঙ্গলের ভেতর জার্মানির বিশেষ পুলিশ বাহিনীর সাঁজোয়া যান। এ–ই ছিল বার্লিনের কেন্দ্র থেকে দক্ষিণে ২৬ কিলোমিটার দূরের ক্লাইনমাখো এলাকার অবস্থা। আর এই হুলুস্থুল কাণ্ড ঘটেছে ‘অজানা’ এক প্রাণীর আনাগোনা ঘিরে।
তবে শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় জানানো হয়, ‘অজানা’ প্রাণীটি নিয়ে বার্লিনের উপকণ্ঠের বাসিন্দাদের উৎকণ্ঠায় থাকার প্রয়োজন নেই। কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রাণীটি সিংহী নয়। সিংহীর বদলে সেখানে বুনো শুয়োরের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
বার্লিনের জাইটুং পত্রিকা কৌতুক করে লিখেছে, বুনো শুয়োর দিয়ে সিংহীর অপমান করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ওই এলাকা পুলিশের ৭০টি গাড়ি দিয়ে ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল। শতাধিক পুলিশ সদস্য রাতভর দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু তাঁরা রাতে ভারী অস্ত্র নিয়ে জঙ্গলে প্রবেশ করেননি। শুক্রবার ভোর থেকেই পুলিশ পেশাদার প্রাণিবিশেষজ্ঞদের নিয়ে বনে অনুসন্ধানে নামে।
বার্লিন পুলিশ শুক্রবার দিনভর ওই অঞ্চলের কোনিগওয়েগ ও জেহেলেনডর্ফের আশপাশের এলাকায় অনুসন্ধান চালায়। পুলিশ সংলগ্ন পটসডামের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ তারা কিছুই খুঁজে পায়নি।
শুক্রবার সারা দিন ক্লাইনমাখো ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ রেখেছিলেন। ডে কেয়ার সেন্টার ও কিন্ডারগার্টেনগুলোও বন্ধ ছিল। রাস্তাঘাট ছিল জনমানবশূন্য।
পরে সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে ক্লাইনমাখোর মেয়র মিশাইল গ্রুবার্ট বলেন, সিংহী নয়, দুটি বুনো শুয়োরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে। বার্লিন ও ব্র্যান্ডেনবার্গ অঞ্চলের বনে বুনো শুয়োরের অস্তিত্ব অনেক আগে থেকেই রয়েছে। মেয়রের এই ঘোষণার পর ৩০ ঘণ্টা ধরে সিংহী খোঁজার অপারেশন স্থগিত করা হয়।
এর আগে গত বুধবার সকালে ক্লাইনমাখো এলাকার শিল্পকারখানার কাছে খয়েরি রঙের একটি প্রাণী দেখতে পাওয়া যায়। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও তারা তা আমলে নেয়নি।
পরে বিকেলে এক কিশোর পুলিশকে জানায়, সে মাঠের প্রান্তে একটি সিংহী দেখেছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শীর কয়েক সেকেন্ডের মুঠোফোন ভিডিওতে বড় আকারের প্রাণীটি দেখা গেলে সতর্ক অবস্থানে যায় পুলিশ।