মানবজীবনের অভাবনীয় পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে হাজির হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। ইতিবাচকের পাশাপাশি এর নেতিবাচক দিকও আছে। তবে চিকিৎসাক্ষেত্রে এআই ব্যবহারে যে নজিরবিহীন কিছু পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে, তারই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে সর্বশেষ একটি গবেষণায়।
গবেষণাটি হয়েছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, কোনো ব্যক্তি ভবিষ্যতে হৃদ্রোগে (হার্ট অ্যাটাক) আক্রান্ত হবেন কি না, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে সেটি আগাম বলে দেওয়া সম্ভব। গবেষকেরা বলছেন, দিন–মাস নয় এ পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব ১০ বছর আগেই।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্যারালাম্বোস আন্তোনিয়াদস এ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। যুক্তরাজ্যে ৮টি হাসপাতালে ৪০ হাজার মানুষের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়েছে। প্রায় তিন বছর ধরে তাঁদের শারীরিক অবস্থা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ ও এ–সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করেন গবেষকেরা।
এর মাধ্যমে গবেষকেরা দেখেছেন, যাঁদের হৃদ্পিণ্ডের রক্তসঞ্চালক ধমনি সংকুচিত হচ্ছে, তারা গুরুতর হৃদ্রোগ ও মৃত্যুর বেশি ঝুঁকিতে। এর তুলনায় দ্বিগুণ মানুষ যাঁদের হৃদ্পিণ্ডের রক্তসঞ্চালক ধমনি তেমন সংকুচিত হয়নি, তাঁরাও হার্টঅ্যাটাক বা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকিতে আছেন।
গবেষক দল নতুন একটি এআই টুল ব্যবহার করেছে। এর মাধ্যমে একজন মানুষের হৃদ্পিণ্ডের রক্তসঞ্চালক ধমনি ঘিরে কতটা চর্বি জমেছে বা কত দ্রুত অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে, সেই তথ্য পাওয়া যায়। একই সঙ্গে ধমনি কতটা সংকুচিত হয়েছে বা হচ্ছে, এ–সংক্রান্ত ঝুঁকিও পর্যালোচনা করা সম্ভব।
ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের (বিএইচএফ) অর্থায়নে করা এই গবেষণায় বলা হচ্ছে, লাখ লাখ মানুষ আছেন, যাঁরা বুকে ব্যথায় ভোগেন। তাঁরা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে আছেন কি না, তা জানা যায় না। এ জন্য ঝুঁকি কমানোর চিকিৎসা বা পদক্ষেপ নিতেও পারেন না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে এসব মানুষের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আগে জানা সম্ভব। এতে হৃদ্রোগ থেকে বাঁচবে হাজার হাজার প্রাণ।