তৃতীয় মেয়াদে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। আজ শনিবার পাঁচ বছরের জন্য তিনি নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। এর মধ্য দিয়ে এরদোয়ানের শাসনক্ষমতা তিন দশকে গড়াল।
প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের আগে কয়েক দফায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন একে পার্টির এই নেতা।
আজ তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় পার্লামেন্টে তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দেশটির জাতীয় টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে।
শপথে এরদোয়ান বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে মহান তুর্কি জাতি ও এর ইতিহাসের সামনে আমার সম্মান ও সততার, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষার শপথ করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি সংবিধান, আইনের শাসন, গণতন্ত্র, আতাতুর্কের নীতি ও সংস্কার এবং ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রের নীতি মেনে চলব।’
এরপরই প্রেসিডেন্ট প্যালেসে এক জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন।
এরদোয়ান গত ২৮ মে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটে কেমাল কিলিচদারওলুকে পরাজিত করেন। এরদোয়ান ৫২ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পান। নির্বাচনের আগে এরদোয়ানের ক্ষমতায় ফেরা নিয়ে যেসব জরিপ হয়েছিল, সেগুলোকে ভুল প্রমাণ করেছেন তিনি। দেশটিতে ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে এরদোয়ানের সমর্থন কমেছে বলে বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছিল।
তুরস্কের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল অর্থনীতি, বিশেষ করে নাগালের বাইরে চলে যাওয়া মূল্যস্ফীতি। জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকটে ক্রয়ক্ষমতা কমে যায় দেশটির নাগরিকদের। এপ্রিল মাসে তুরস্কের বার্ষিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ৪০ শতাংশে, যা গত বছর ৮৫ শতাংশে গিয়ে ঠেকে বলে সরকারিভাবেই বলা হয়। এই মূল্যস্ফীতি ঠেকানোকে এরদোয়ানের বড় চ্যালেঞ্জ মনে করা হচ্ছে।
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে কম নাটকীয়তা হয়নি। ১৪ মে তুরস্কে প্রথম দফার ভোট গ্রহণ হয়। সেদিন ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ ভোট পান এরদোয়ান। কেমাল পান ৪৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ ভোট। তুরস্কের নির্বাচনী আইনে বলা আছে, কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াবে।
তুরস্কের ইতিহাসে এবারই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ায়। নির্বাচন এবং ভোটের ফলাফলের এই চিত্র তুরস্কের সমাজে বিদ্যমান বিভাজনের দৃশ্যপট তুলে ধরছে। এরদোয়ানকে এখন এই বিভাজন দূর করে সামনে এগোতে হবে।