প্রচণ্ড গরমে নাকাল যুক্তরাজ্যের জনজীবন। আগামী সপ্তাহে ইংল্যান্ডের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে যাবে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। দাবদাহ বাড়তে পারে যুক্তরাজ্যের বাদবাকি এলাকায়ও। এমন পরিস্থিতিতে মৃত্যু এড়াতে সাধারণ কিছু উপায় মেনে চলে নিরাপদে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থার (ইউকেএইচএসএ) প্রধান বিজ্ঞানী অধ্যাপক ইসাবেল অলিভার।
আজ শনিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গরমের কারণে যুক্তরাজ্যে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। তীব্র দাবদাহে দেশটিতে প্রথমবারের মতো জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে প্রয়োজন ছাড়া রেলভ্রমণ না করতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট করে দেওয়া হতে পারে ট্রেনের গতিসীমা। গরমের মধ্যে আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে কিছু স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। কয়েকটি হাসপাতালে রোগীদের সাক্ষাৎও বাতিল করা হয়েছে।
বিবিসি রেডিও ফোর ‘টুডে’ অনুষ্ঠানে ইসাবেল অলিভারকে প্রশ্ন করা হয়, গরমের কারণে হাজার হাজার মানুষ মারা যেতে পারেন কি না? কারণ, সংবাদমাধ্যমগুলোতে এ ধরনের কথা বলা হচ্ছে। জবাবে মৃত্যুর নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা তুলে ধরেননি ইসাবেল। তিনি বলেন, ‘বিষয়টির পূর্বাভাস দেওয়া খুবই জটিল। তবে আপনাদের বলতে পারি, আমরা গভীরভাবে নজর রাখছি।’
ইসাবেল বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রার যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, গত বছরে যুক্তরাজ্যের কোনো এলাকায় এর ধারেকাছে গরম পড়েনি। তাতেই সে সময় গরমে বাড়তি ১ হাজার ৬০০ জনের মৃত্যু দেখা গেছে। এই কারণে আমরা চাচ্ছি, নিরাপদে থাকার নানা উপায়গুলো সম্পর্কে সবাই জানুক।’
সাক্ষাৎকারে নিরাপদে থাকার উপায়গুলো সম্পর্কেও কথা বলেছেন ইউকেএইচএসএর এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘মূল বার্তাটা হলো, আমরা অবশ্যই (গরমের কারণে) এই মৃত্যু এড়াতে পারি, যদি সাধারণ কিছু উপায় মেনে চলি। আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। নিজেদের শীতল রাখতে হবে; সূর্য যে সময়ে সবচেয়ে উত্তাপ ছড়ায়, বিশেষ করে বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত আমাদের সূর্যের তাপ এড়িয়ে চলতে হবে। আর গরমের কারণে যারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে, তাদের দেখভাল করতে হবে।’
যুক্তরাজ্যের বর্তমান তাপমাত্রা নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছেন বিবিসি ওয়েদারের কর্মকর্তা সুসান পয়েল। তিনি বলেন, ২০১৯ সালে দেশটির কেমব্রিজে সর্বোচ্চ ৩৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। এবার সেই রেকর্ড ভেঙে যাওয়ার ৮০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। আর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অন্তত ৫০ শতাংশ। উত্তর আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডও তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড দেখতে পারে।