যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক ইরানি টিভি চ্যানেল ইরান ইন্টারন্যাশনালের এক উপস্থাপককে ছুরিকাঘাত করেছে দুর্বৃত্তরা। লন্ডনে বাড়ির বাইরে তাঁকে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করা হয়। ইরান ইন্টারন্যাশনাল এ তথ্য জানিয়েছে।
২০২২ সালে ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে এ-সংক্রান্ত খবরাখবর ব্যাপকভাবে প্রচার করেছিল ইরান ইন্টারন্যাশনাল। টিভি চ্যানেলটি জানায়, ছুরিকাঘাতের শিকার উপস্থাপকের নাম পুরিয়া জেরাতি (৩৬)। একদল দুর্বৃত্ত তাঁর ওপর হামলা চালায়।
লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ বলেছে, হামলার ঘটনাটি তদন্ত করছেন সন্ত্রাস দমনসংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
পুরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মেট্রোপলিটন পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী কমান্ড ইউনিটের প্রধান ডমিনিক মারফি বলেন, এই হামলার পেছনে উদ্দেশ্য কী, তা খুঁজে বের করতে কর্মকর্তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাঁরা সম্ভাব্য সব বিষয়ই বিবেচনায় রাখছেন।
মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী একজন সাংবাদিক। তিনি যুক্তরাজ্যভিত্তিক ফারসি ভাষার একটি সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তাঁর ওপর হামলার ঘটনাটি তদন্তের জন্য সন্ত্রাস দমনবিরোধী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আগেও এই সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানটির সাংবাদিকদের কয়েকবার হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে উল্লেখ করে পুলিশ।
ডমিনিক মারফি বলেন, সতর্কতার অংশ হিসেবে দক্ষিণ লন্ডনের যে জায়গায় হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেখানে এবং লন্ডনের অন্যান্য স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল জোরদার করা হয়েছে।
হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
প্রায় ১৮ মাস আগে ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের অন্যতম সংবাদসূত্র হয়ে উঠেছিল ইরান ইন্টারন্যাশনাল।
২০২২ সালের নভেম্বরে চ্যানেলটির ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ সাংবাদিককে তাঁদের জীবনের সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছিল।
একই সময়ে ইরানের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রী ইসমাইল খাতিব বলেছিলেন, তাঁর সরকার ইরান ইন্টারন্যাশনালকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সংবাদমাধ্যমটির বিরুদ্ধে ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ তোলে তেহরান।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে লন্ডনে সম্প্রচার কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ করে দেয় ইরান ইন্টারন্যাশনাল। পরে তারা নিজেদের সম্প্রচার স্টুডিও যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে নিয়ে যায়।
সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, ইরান সরকার-সমর্থিত হুমকির মুখে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে লন্ডনের নতুন একটি স্থান থেকে টিভি চ্যানেলটির কার্যক্রম আবার শুরু হয়।