গুগল ম্যাপের ছবিতে দেখা যায়, স্পেনের সোরিয়া প্রদেশের তাজুয়েকো গ্রামের একটি রাস্তায় দাঁড়ানো গাড়ির পেছনে সাদা প্লাস্টিকের ব্যাগে মোড়ানো কিছু রাখছেন এক ব্যক্তি
গুগল ম্যাপের ছবিতে দেখা যায়, স্পেনের সোরিয়া প্রদেশের তাজুয়েকো গ্রামের একটি রাস্তায় দাঁড়ানো গাড়ির পেছনে সাদা প্লাস্টিকের ব্যাগে মোড়ানো কিছু রাখছেন এক ব্যক্তি

হত্যারহস্যের জট খুলল গুগল ম্যাপ

প্রতিদিন আমরা কত ধরনের প্রযুক্তিপণ্যই না ব্যবহার করি। নিয়ে থাকি নানা প্রযুক্তিসেবা। বলা চলে গুগল ম্যাপের কথাই। এই সেবা ব্যবহার করে নিমেষেই পরিচিত হওয়া যায় অচেনা পথের সঙ্গে। তবে গুগল ম্যাপ হত্যারহস্যের জট খুলেছে—এ কথায় হয়তো অবাক হবেন অনেকে। ইউরোপের দেশ স্পেনে কিন্তু এমন ঘটনাই ঘটেছে।

ঘটনা ২০২৩ সালের। সে বছরের অক্টোবর মাসে স্পেনের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলের ক্যাস্তাইল অ্যান্ড লিওঁ অঞ্চল থেকে নিখোঁজ হন কিউবার ৩৩ বছর বয়সী একজন নাগরিক। পরে তাঁর মুঠোফোন থেকে এক স্বজনের কাছে একটি খুদে বার্তা যায়। বার্তাটি দেখে সন্দেহ হয় ওই স্বজনের। তিনি পুলিশকে জানান, কিউবার ওই নাগরিকের সঙ্গে এক নারীর সাক্ষাৎ হয়েছিল। এরপর তাঁর দেশত্যাগের কথা ছিল। দেশ ছাড়ার পর তাঁর মুঠোফোন থেকে বার্তা আসাটা সন্দেহজনক।

পরে ২০২৩ সালের নভেম্বরে এ ঘটনা তদন্তে নামে ক্যাস্তাইল অ্যান্ড লিওঁ পুলিশ। এরপর গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, তাঁরা চলতি বছরের ১২ নভেম্বর কিউবার ওই নাগরিকের সঙ্গে থাকা নারী এবং তাঁর সাবেক একজন পুরুষ সঙ্গীকে স্পেনের সোরিয়া প্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া ডিসেম্বরের শুরুর দিকে সোরিয়ার একটি কবরস্থান থেকে গলিত একটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে মৃতদেহটি এক বছর আগে নিখোঁজ হওয়া ওই ব্যক্তির।

এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কী ঘটনা, তদন্তে নেমে কোনোভাবেই তা বের করতে পারছিল না পুলিশ। পরে তাদের হাতে গুগল ম্যাপের ধারণ করা কিছু ছবি আসে। তাতে দেখা যায়, সোরিয়া প্রদেশের তাজুয়েকো গ্রামের একটি রাস্তায় দাঁড়ানো গাড়ির পেছনে সাদা প্লাস্টিকের ব্যাগে মোড়ানো কিছু রাখছেন এক ব্যক্তি। ওই ব্যাগের ভেতরে মরদেহ রয়েছে বলেই মনে হচ্ছিল। এ ছাড়া গাড়িটিও শনাক্ত করতে পারেন পুলিশ কর্মকর্তারা। ছবিটি রহস্যের জট খুলতে সহায়তা করে। তবে ছবিগুলো হত্যাকাণ্ডের ‘চূড়ান্ত প্রমাণ’ বলে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয় পুলিশ।

গুগল ম্যাপের ‘স্ট্রিট ভিউ’য়ের মাধ্যমে রাস্তার বাস্তব চিত্র পাওয়া যায়। গুগলের একটি গাড়ি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ওই ছবি সংগ্রহ করে। পরে তা ম্যাপে যুক্ত করা হয়। এমনই একদিন ছবি তোলার সময় ধরা পড়ে গাড়ির পেছনে ‘মৃতদেহ’ লুকানোর চিত্র। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের তাই দুর্ভাগা বলতেই হবে। কারণ, দীর্ঘ ১৫ বছর পর তাজুয়েকো গ্রামে প্রথমবারের মতো ছবি তুলতে গিয়েছিল গুগলের গাড়ি। আর সেবারই ধরা পড়েছে তাঁদের ‘অপকর্মের’ ছবি।