ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে যাওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ বছর এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনের তথ্যমতে, গত শনিবার এক দিনেই ১৯টি ছোট নৌকায় চড়ে ৯১৫ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কেন্ট শহরে পৌঁছান। তাঁদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে।
চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ৮ হাজার ৭৪৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু গত সপ্তাহেই এসেছেন ৩ হাজার ৭৩৩ জন। গত সোমবার দেখা গেছে, শুধু ওই দিনই এসেছেন ১ হাজার ২৯৫ জন, যা এ বছর এক দিনে সর্বোচ্চ।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল অভিবাসনপ্রত্যাশীদের এই চ্যানেল অতিক্রম করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টার অংশ হিসেবে রুয়ান্ডায় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পাঠানোর পরিকল্পনা উন্মোচন করেছেন। তাঁর এ উদ্যোগের চার মাসেরও বেশি সময় হয়ে গেছে। এই উদ্যোগের পর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন ১৯ হাজার ৮৭৮ জন।
গত এপ্রিল মাসে প্রীতি প্যাটেল এটি চুক্তিতে সই করেছিলেন। রুয়ান্ডার সঙ্গে করা ওই চুক্তিকে ‘বিশ্বের প্রথম’ চুক্তি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। চুক্তিতে পূর্ব আফ্রিকান দেশটি যুক্তরাজ্যে ‘অবৈধভাবে’ আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের গ্রহণ করবে এবং নতুন অভিবাসন নিয়মের অধীন অবৈধ পথে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীরা অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করা আছে।
গত জুনে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বিনিময়ের কথা থাকলেও আইনি জটিলতায় তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই নীতির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আশ্রয়প্রত্যাশী, পাবলিক, কমার্শিয়াল ইউনিয়নসহ কিছু দাতব্য সংস্থা এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে। এ বিষয়ে আগামী সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে আদালতে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় জাহাজ চলাচলের ব্যস্ত রুট চালুর পর ফ্রান্স থেকে ছোট নৌকায় করে যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে।
যুক্তরাজ্যের সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ফ্রান্স থেকে ২০১৮ সালে ২৯৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী এসেছেন। ২০১৯ সালে ১ হাজার ৮৪৩, ২০২০ সালে ৮ হাজার ৪৬৬ জন এবং গত বছর ৮ হাজার ৫২৬ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ফ্রান্স থেকে যুক্তরাজ্যে এসেছেন।
এদিকে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার তথ্যমতে, গত বছর স্থল ও সমুদ্রপথে ভূমধ্যসাগর হয়ে ১ লাখ ২০ হাজার ৪৪১ অভিবাসনপ্রত্যাশী ইউরোপের মূল ভূখণ্ডে এসেছেন।