ইউক্রেনের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলে জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশে সামরিক কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে সতর্ক করে বো হয়েছে, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশে সামরিক হামলার ঘটনা ইউক্রেনকে পারমাণবিক বিপর্যয়ের চরম ঝুঁকিতে ফেলেছে। যেকোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। খবর বিবিসির।
আইএইএ–এর প্রধান রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে সামরিক হামলার ঘটনায় আমি ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন। এটা বড় ধরনের বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। তাই অবিলম্বে ওই এলাকায় সামরিক হামলা বন্ধ করতে হবে।’
বিবৃতিতে আইএইএ–এর প্রধান আরও বলেন, ওই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে যেকোন বিপর্যয় ঘটলে তা ইউক্রেন ও আশপাশের দেশগুলোয় জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ঝুঁকি তৈরি করবে। তাই ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র ও আশপাশের এলাকায় সামরিক কার্যক্রম চালানো আগুন নিয়ে খেলার সমান। এর করুণ পরিণতি ভোগ করতে হবে।
চলতি বছরের মার্চ থেকে জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও এর আশপাশের এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে রাশিয়া। তবে সেখানকার ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় হামলা–পাল্টা হামলার খবর পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রুশ বাহিনী ওই এলাকায় বেসামরিক মানুষের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে। এমনকি রাশিয়ার হামলায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির একটি অংশও ‘গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। দেশটির এমন দাবির পরপরই আইএইএ–এর পক্ষ থেকে সতর্ক করে দেওয়া হলো।
ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের এনারহোদার শহরে জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অবস্থিত। এটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে। ইউক্রেনের এক-চতুর্থাংশ বিদ্যুৎ এ কেন্দ্র থেকে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। গত মার্চে রুশ হামলায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ছয়টি চুল্লির একটিতে আগুন ধরে গিয়েছিল। তবে বিপর্যয় থেকে রক্ষা পায় কেন্দ্রটি।
ওই সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে। তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে পরমাণু সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ তুলে বলেন, রাশিয়া ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি চায়। সেইসঙ্গে জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় সামরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও জেলেনস্কি।