বার্বি ডল পছন্দ করেন না, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে এটাও সত্য, সুন্দর এই পুতুলগুলো সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন জার্মানির এক নারী। তাঁর নাম বেটিনা ডর্ফম্যান।
বয়স ৬২ বছর হলেও বেটিনা এখনো পুতুল ভালোবাসেন। বার্বি তাঁর এতই প্রিয় যে তিনি রীতিমতো একটি সংগ্রহশালা গড়ে তুলেছেন। ১টি, ২টি বা ১০টি নয়, বরং ১৫ হাজার বার্বি রয়েছে বেটিনার কাছে। আর এই বার্বিগুলোও নানা ধরনের।
বেটিনার এই সংগ্রহ নিয়ে গতকাল শুক্রবার (২১ জুলাই) গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। তিন দশক আগে থেকে তিনি বার্বি সংগ্রহ শুরু করেন।
সবচেয়ে বেশি বার্বি পুতুল সংগ্রহের জন্য ২০০৫ সালে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন বেটিনা। তাঁর নাম ওঠে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের পাতায়। ওই সময় তাঁর সংগ্রহে ছিল ২ হাজার ৫০০ বার্বি। এর মধ্য দিয়ে বেটিনা যুক্তরাজ্যের টনি মাত্তিয়ার রেকর্ড ভেঙে দেন। টনির সংগ্রহে ১ হাজার ১২৫টি বার্বি ছিল।
এর পর থেকে বেটিনার বার্বি সংগ্রহ ক্রমেই বেড়েছে। ২০১১ সালে সংখ্যাটি ১৫ হাজারে পৌঁছেছে। এর অর্থ হলো, এখন বেটিনার কাছে আরও বেশি বার্বি রয়েছে। আর ২০০৫ সাল থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বার্বি সংগ্রহে রাখার রেকর্ডটাও নিজের করে রেখেছেন বেটিনা।
বেটিনার বয়স যখন পাঁচ বছর, তখন হাতে এসেছিল প্রথম বার্বি। সময়টা ১৯৬৬ সাল। তখন থেকেই বার্বির প্রতি তাঁর অন্য রকম এক ভালো লাগা। তিনি বলেন, ‘আমি বার্বি ভীষণ ভালোবাসি। কারণ, আমি শৈশবে বার্বি নিয়ে খেলতাম। সেটা আমার জীবনের সুন্দর সময় ছিল।’
১৯৯৩ সাল থেকে মনোযোগ দিয়ে বার্বি সংগ্রহ শুরু করেন বেটিনা। তাঁর ভান্ডারে অনেক বিরল বার্বিও রয়েছে। শুধু সংগ্রহে রাখা নয়, বার্বির প্রদর্শনী করেন বেটিনা।
তিনি বার্বি নিয়ে বই লিখেছেন। পরিচিতজনদের বার্বি ভেঙে গেলে বা নষ্ট হলে সেসবের মেরামত করে দেন তিনি। এ জন্য নিজের বাড়িতে বেটিনার একটি ‘বার্বি হাসপাতাল’ রয়েছে। এ জন্য বেটিনা ‘বার্বি চিকিৎসক’ হিসেবে পরিচিত।
বিশ্বে বার্বির যাত্রা শুরু হয় পঞ্চাশের দশকে। যুক্তরাষ্ট্রের রুথ হ্যান্ডলারের মাথা থেকে আসে এই পুতুল বানানোর ভাবনা। ‘বিল্ড লিলি’ নামের একটি জার্মান পুতুল বাজারে এসেছিল ১৯৫২ সালে। লিলি আর নিজের কল্পনার মিশেলে একটা পুতুল দাঁড় করান রুথ। ১৯৫৯ সালের ৯ মার্চ রুথের হাত ধরে সেটাকে বাজারে আনে বিশ্বখ্যাত মার্কিন খেলনা নির্মাতা কোম্পানি ম্যাটেল।
এর পরের গল্পটা বিশ্বজয়ের। অল্প সময়ের মধ্য তুমুল জনপ্রিয়তা পায় বার্বি। এ পর্যন্ত দেড় শর বেশি পেশাজীবীর চরিত্রে বার্বিকে দেখা গেছে। অগ্নিনির্বাপণকর্মী থেকে সাংবাদিক, প্রকৌশলী থেকে চিকিৎসক—অনুপ্রেরণা দেওয়ার মতো প্রায় সব পেশাজীবী হিসেবেই শিশুদের হাতে উঠেছে এই পুতুল। বিক্রি হয়েছে কোটি কোটি বার্বি। এ ছাড়া বার্বি নিয়ে বানানো হয়েছে তুমুল জনপ্রিয় কিছু সিনেমাও।